তবে প্রশাসনের দাবি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৯ মার্চ থেকে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ ঘোষণা করলেও কিছু কোচিং সেন্টার গোপনীয়ভাবে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়ার পরও যদি কেউ কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন তার দায়ভাব কোচিং কর্তৃপক্ষের বলেই দাবি করেছেন বরিশাল কোচিং অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। নেতাদের দাবি, অনুযায়ী কোচিং সেন্টার বন্ধ হলেও কতিপয় শিক্ষক স্থানবদল করে গোপনে নিয়মিত ব্যাচ পরিচালনা করছেন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নেওয়া ও পরীক্ষা শুরু আগেই বরিশালে কোচিং নিয়ে মোটিভেশনাল কার্যক্রম হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত পেয়ে আমরা অভিযান শুরু করেছি। পরীক্ষার আগেরদিন থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান প্রতিনিয়ত চলছে ও চলবে।
তিনি বলেন, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকলে ভালো, তবে চলমান অভিযানে কিছু সেন্টার পরিচালনাকারীদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিছু বন্ধও পেয়েছি। আশাকরি আমাদের এ অভিযান সরকারের সিদ্ধান্তে সফলতা বয়ে আনবে।
এদিকে খোলা কিছু বন্ধ থাকলে অনেক শিক্ষার্থীই পাঠদানে পিছিয়ে পড়বে বলে দাবি করেন অভিভাবকরা।
বুধবার বিকেল ও বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) সকালে বরিশালের বগুরা রোড, বটতলা, হাসপাতাল রোড, নতুনবাজার, নবগ্রামরোড, দক্ষিণ আলেকান্দা, সাগরিদ, কাউনিয়া প্রধান সড়ক এলাকার বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ইউসিসিসহ বেশ কিছু কোচিং সেন্টারের অফিসকক্ষ খোলা পাওয়া যায়। তবে সেখানে কোনো কোচিং ক্লাস পরিচালিত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে নগরের ফকিরবাড়ি, গোরস্থানরোড, গোরাচাঁদদাস রোড, কালুশাহসড়কসহ যেসব জায়গায় শিক্ষকরা নিয়মিত ব্যাচ পড়ায় সেসব জায়গাতেও শিক্ষার্থীদের আনাগোনা দেখা যায়নি।
বরিশাল কোচিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইলিয়াছ হোসেন সুমন বাংলানিউজকে বলেন, এখানে শতাধিক কোচিং সেন্টার রয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের আওতাধীন এখানে ৩০টি কোচিং সেন্টার আছে। তাদের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কেউ যদি পরিচালনা করে তবে তা অতি গোপনীয়ভাবে।
তিনি বলেন, কয়েকটি এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে, কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যারা ব্যাচ পড়ান, তাদের মধ্যে অনেকই গোপনে পড়াচ্ছেন। যারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার যুগে, চাহিদা অনুযায়ী কোচিং সেন্টার। আমাদের কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে আসার জন্য চাপ দেওয়া হয় না। এটি বন্ধে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছেন বলে তিনি কোচিং সেন্টারের জন্য সুন্দর একটি নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।
প্রাইভেট পড়ানো ও কোচিং এক জিনিস নয় বলে দাবি করে বরিশাল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল আলম আসাদ বাংলানিউজকে বলেন, নকল ও প্রশ্নপত্র ফাঁসমুক্ত পরীক্ষার জন্য সরকারের এটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অবশ্যই ভালো। কিছুদিনের বন্ধে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এমএস/এএটি