ধারণা করা হয়, প্রশ্ন ফাঁস করার সঙ্গে কোচিং সেন্টারের কোনো না কোনো যোগসূত্র রয়েছে। অনেক কোচিং সেন্টার উচ্চ হারে লেনদেনের বিনিময়ে প্রশ্নফাঁসে জড়িত বলে ধারণা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ অনেক মহলের।
সরকারি সিদ্ধান্ত ‘মেনে’ অনেক কোচিং সেন্টার বাইরে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এখানেও অনেক ক্ষেত্রে রয়ে গেছে শুভঙ্করের ফাঁকি। এর আড়ালে কোচিং সেন্টার ঠিকই খোলা আছে। তবে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা আগের মতো নেই। তাছাড়া পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা খুব বেশি আসবে না এটাই স্বাভাবিক। তবু কোনো অজানা কারণে কৌশলে কোচিং সেন্টার খুলে রেখেছেন সংশ্লিষ্ট কোচিং সেন্টারগুলোর মালিকগণ।
তবে আশার কথা, এ পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের দুটি পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত পরীক্ষার কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর কোথাও পাওয়া যায়নি। বাকি পরীক্ষাগুলোতে হবে কি না সেটা সময়ই বলে দেবে। কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটি যে ইতিবাচক সে ব্যাপারে সবাই প্রায় একমত।
বুধবার (০৪ এপ্রিল) ‘কোচিংয়ের স্বর্গরাজ্য’ বলে পরিচিত ফার্মগেট এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ইউসিসি কোচিং সেন্টারের বাইরে নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৯ মার্চ থেকে কোচিং সেন্টারের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ। অথচ আসলে কৌশল করে খোলাই রাখা হয়েছে সেন্টারটি।
রিসিপশনে বসে থাকা আসমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ। এখন কোনো ক্লাসও হয় না, ছাত্রছাত্রীও আসে না।
‘তাহলে খোলা কেন রেখেছেন?’ এ প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই আসবে জানতে। তাছাড়া আমাদের পরীক্ষা পরবর্তী কার্যক্রম চালু করতে প্রস্তুতি দরকার। আর এজন্যই অফিসিয়ালি কাজ করছি।
সাকসেস কোচিং সেন্টারেরও বাইরে বন্ধের নোটিশ থাকলেও ভেতরে কিন্তু খোলাই রাখা হয়েছে। একই অবস্থা তেজগাঁও কলেজের গলিতে। সেখানে সাকসেস অফিস নামে একটি কোটিং সেন্টার রয়েছে। এই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক আবার তেজগাঁও কলেজের শিক্ষকরা।
সাকসেস অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এটা আসলে কোচিং সেন্টার নয়। আমাদের এখানে তেজগাঁও কলেজে শিক্ষকরা অনার্স লেবেলের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। রবিন স্যার, লিটন স্যার ও তায়েব স্যার এখানে নিয়মিত ক্লাস নেন। তবে সরকারি ঘোষণার পর প্রথম দুই দিন কোনো ক্লাস হয়নি। আজ বিকেলে ক্লাস শুরু হবে।
এরকম অধিকাংশ কোচিং সেন্টারই বাহিরে নোটিশ দিয়ে ভেতরে ক্লাশ নিচ্ছেন। আর কোচিং সেন্টারগুলোর বক্তব্য, তাদের মূল টার্গেট এখন ক্লাস নেওয়া নয়, এখন শুধু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলা।
পরীক্ষা শেষে তারা পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে লিফলেট বিতরণ করছে এবং চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এসএম/জেএম