ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রজ্ঞাপন জারির দাবি, তখন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৮
প্রজ্ঞাপন জারির দাবি, তখন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: কোটাপ্রথা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঘোষণা অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন আকারে জারির দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওই প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া পর্যন্ত নিজেদের আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা এ অবস্থান জানান।

লাগাতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে বক্তৃতাকালে কোটা পদ্ধতিই বাতিল করার ঘোষণা দেওয়ার পর নিজেদের অবস্থান জানাতে বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত সময় নেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

এতে আন্দোলকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাটি অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করার দাবি জানাচ্ছি। আন্দোলন প্রত্যাহার বা বাতিল নয়, প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করছি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব অবস্থান নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব এডুকেশন’ উপাধিও দেন শিক্ষার্থীদের এ মুখপাত্র।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান চারটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- আন্দোলনকালে আটক শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো রূপ হয়রানি থেকে বিরত থাকতে হবে।  

এ দাবি মানা না হলে পুনরায় আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন রাশেদ খান।

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে গত ৮ এপ্রিল ঢাবিতে গণপদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাতে শিক্ষার্থীদের সরাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করলে শিক্ষার্থীরা ঢাবি ক্যাম্পাসে ঢুকে যান।  

এরমধ্যেই রাতে তাণ্ডব চালানো হয় ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনে। ভবনের ভেতরে ভাঙচুর-লুটপাটের পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করা হয় বাইরে থাকা গাড়িতেও।

এ কর্মসূচি চলে পরদিন সোমবারও (৯ এপ্রিল)। মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) রাতে আন্দোলনকারী ছাত্রীদের কবি সুফিয়া কামাল হলে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠলে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। মধ্যরাতেই রাস্তায় নেমে পড়েন বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা।

পরদিন বুধবার (১১ এপ্রিল) সকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে সংগঠনটির প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানায়, প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতিই বাতিল করে দেওয়ার কথা বলেছেন। সংবাদ সম্মেলন করে একই কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও।

সে অনুযায়ী বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতি বাতিল করার ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত জানাতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় নেন।

এদিকে, ভিসির বাসভবনে হামলাসহ আন্দোলনকালে সহিংসতার ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের হয়েছে শাহবাগ থানায়। এরমধ্যে একটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা। বাকি চারটি করেছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, ১২, ২০১৮
এমএসি/এসকেবি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।