১৯২১ সালে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য স্যার পি জে হার্টগ এই ভবনে ওঠেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব উপাচার্যরা এই ভবনেই থেকেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাসা ছাড়ার পর পুরো ভবন সংস্কার করা হয়। মার্চে ওঠেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। কিন্তু গত ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল থেকে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত উপাচার্যের বাসভবনে হামলা করে সবকিছুই তছনছ করে ফেলে। ফুলের টব থেকে শুরু করে আসবাবপত্র, ব্যক্তিগত গাড়ি, বেডরুম- সবখানেই ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাদ যায়নি বাথরুমের কমোডও।
প্রধানমন্ত্রী, সরকারের মন্ত্রীসহ গোটা দেশের মানুষ এ হামলার তীব্র নিন্দা জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ওঠে সমালোচনার ঝড়। প্রথমে আন্দোলনকারীদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে একটি মহল। পরে বিভিন্ন ভিডিও এবং স্থিরচিত্রে দেখা যায় হামলাকারীরা মুখোশধারী। নিন্দনীয় এ ঘটনায় ঠিক কারা দায়ী সেটা এখন তদন্তাধীন।
এতো বড় হামলার পর শুরু হয়েছে ক্ষত সারানোর কাজ। উপাচার্য বাসভবনে চলছে সংস্কার। সরেজমিনে দেখা যায়, হামলার পরে মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ফুলের টবগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে পড়ে থাকা কাচ পরিষ্কার করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া টিভিগুলো এখনো সরানো হয়নি। পাশের কক্ষেই উপাচার্য সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে একটি মাত্র সোফা সেট রয়েছে। যেটি অক্ষত ছিল।
ভাঙচুর করা বিভিন্ন পদক, ক্রেস্ট রয়েছে এক পাশে। তার পাশেই ওয়াশরুমের জানালার গ্লাস এখনো ভাঙা। তবে সাক্ষাৎপ্রার্থীদের জন্য নাস্তা তৈরির কক্ষে নতুন বেসিন লাগানো হচ্ছে। আনা হয়েছে নতুন কাপ-পিরিচ।
নিচতলার জানালায় কাচ লাগানো হচ্ছে। দরজা এখনো ঠিক করা হয়নি। দ্বিতীয় তলায় জানালায় গ্লাস লাগানো শেষের দিকে। এছাড়া ভবনের অনেক বাতিই নষ্ট করা হয়েছে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মেরামতের কাজ চলছে।
জানালায় কাচের কাজ করছেন মিস্ত্রী রবি। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সব জানালার কাচ ভাঙা হয়েছে। সব কাজ শেষ করতে সময় লাগবে।
হামলাকারীরা দু’টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভবনের পেছনে গ্যারেজে রাখা উপাচার্যের ব্যক্তিগত গাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। বর্তমানে উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) গাড়িতে করে তিনি যাতায়াত করছেন।
উপাচার্যের বাসভবনের বাইরে পুলিশ সদস্যদের বসার জন্য ছাউনি পুড়িয়ে দেওয়ায় বর্তমানে পুলিশ সদস্যরা ভেতরে অবস্থান করছেন।
১৯৭৯ সাল থেকে উপাচার্য ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর দাযিত্ব পালন করা মনির বাংলানিউজকে বলেন, হামলাকারীরা এমনভাবে ভাঙচুর করেছে পানি খাওয়ার গ্লাস পর্যন্ত ছিল না।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ভবনের সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে সব কিছু ঠিক হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
এসকেবি/এএ