ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেরোবিতে গবেষণার নামে ‘বাণিজ্যিক’ প্রতিষ্ঠান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
বেরোবিতে গবেষণার নামে ‘বাণিজ্যিক’ প্রতিষ্ঠান ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-ছবি-বাংলানিউজ

রংপুর (বেরোবি): বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের দু’টি ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হয়েছে। 

সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশন থেকে উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ নিজে প্রোপ্রাইটর হয়ে এ লাইসেন্স নেন। এছাড়াও রাজস্ব বোর্ড থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ট্যাক্স পেয়ারর্স ও বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) খোলা হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের নামে।

 

একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের গবেষণা, উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উদ্দেশে প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউটকে এভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
 
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয় ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। যার মূল কাজ গবেষণা, উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়া। কিন্তু সম্প্রতি ইনস্টিটিউটকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আওতায় নিয়ে আসেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। রসিক থেকে নেওয়া দু’টি ট্রেড লাইসেন্সেরই প্রোপ্রাইটর তিনি নিজেই। ট্রেড লাইসেন্সের একটিতে ব্যবসার ধরনে উল্লেখ রয়েছে 'শিক্ষামূলক কনসালটেন্সি', আর একটিতে 'রিসার্চ সেন্টার' হিসেবে। এছাড়াও চলতি বছরের আগস্টে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে ইনস্টিটিউটকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে খোলা হয়েছে ট্যাক্স পেয়ারর্স ও বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর।  

এদিক প্রতিষ্ঠার নয় বছরে কোনো উপাচার্যের আমলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষণার জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি ইনস্টিটিউটে এমফিল ও পিএইচডি কোর্সের জন্য ২২ জন ভর্তি হলেও বিগত ৭ বছরে কেউই তাদের কোর্স শেষ করতে পারেননি। এক প্রকার মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এটি। এমন অচলাবস্থায় আবারও এমফিল ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রশাসন।  

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের  ইনস্টিটিউটকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

ইনস্টিটিউটটির গবেষক ড. রোকনুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বাণিজ্যিকরণের ফলে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। দেশের উন্নয়নকল্পে সঠিক গবেষণা থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিচ্যুতি ঘটবে।  

ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন পদক্ষেপ শিক্ষানীতি বা সংবিধান কোনটির সঙ্গে যায়না। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা উচিৎ।  

রসিক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী সিটির ভেতরে কোনো অবকাঠামো বা  প্রতিষ্ঠানকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার এখতিয়ার সিটি করপোরেশনের রয়েছে।  

এ বিষয়ে কথা বলতে রেজিস্টার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীরের দফতরে গেলে তার দেখা পাওয়া যায়নি। পরে তার মোবাইলে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ না করে কেটে দেন। কিছুসময় পর আবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।  

ইনস্টিটিউটটির পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহকে বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।