ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নুসরাতের স্মরণে ববির শিক্ষার্থীদের নীরবতা পালন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
নুসরাতের স্মরণে ববির শিক্ষার্থীদের নীরবতা পালন ববির শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে শোক জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন।

সড়কে ইট পাথর ও গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন জালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পাশাপাশি শামিয়ানা টানিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার সঙ্গে সড়কপথে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের উভয়পাশে যানবাহনের তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীসাধারণ চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে সড়কের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে গিয়ে বিকল্প পথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন।

উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন ববির শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম জানান, আমরা মানুষের ভোগান্তি চাই না, আবার দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লাসেও ফিরতে চাই। তাই আমাদের দাবি দ্রুত মানা হোক নয় তো আন্দোলন আরো কঠোর হবে।

ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের কারণে একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটক আটকে থাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাইরেই অবস্থান করছেন।

শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়। এর প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

২৬ মার্চ থেকে তাদের লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রধান, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে লিখে ভিসি’র পদত্যাগ দাবী, ভিসি’র কুশপুতুল দাহ ও মশালমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন তারা। এজন্য আন্দোলনের দু’দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

পরবর্তীতে শনিবার (৬ এপ্রিল) বরিশাল সার্কিট হাউজে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক উর্ধতন কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিশে রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।   তবে শিক্ষার্থীরা সে নোটিশ প্রত্যাখান করে উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।