ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘টাকা ধার নিয়েছিলাম, নিয়োগের আগেই ফেরত দিয়েছি’

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৯
‘টাকা ধার নিয়েছিলাম, নিয়োগের আগেই ফেরত দিয়েছি’

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া কর্তৃক আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে আনীত শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নিয়োগের আগে যেই চাকরি প্রত্যাশীর কাছ থেকে ধার হিসেবে টাকা নেওয়া হয়েছিল এবং নিয়োগ বোর্ডের আগেই সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের একটি কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যাপক আব্দুল হান্নান এসব দাবি করেন।  

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক হান্নান ধার হিসেবে নেওয়া টাকা ও তা পরিশোধের ব্যাংক রিসিপ্ট ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্টের ফটোকপি এবং চাকরিপ্রত্যাশী নুরুল হুদার সঙ্গে কথোপকথনের একটি রেকর্ডিং উপস্থাপন করেন।



এর আগে ৩ অক্টোবর রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যাপক হান্নানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।

চৌধুরী মো. জাকারিয়ার দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক হান্নান বলেন, আমার দুই লাখ টাকার প্রয়োজন ছিল। ওই সময় নুরুল হুদার কাছ থেকে সপ্তাহ খানেকের জন্য দুই লাখ টাকা ধার নেই। ৪ নভেম্বর নুরুল হুদা নীলফামারীর সৈয়দপুর শাখা ইসলামী ব্যাংক থেকে রাজশাহী শাখা ইসলামী ব্যাংকের ডিসেন্ট ট্রেডার্স’র অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমাকে দুই লাখ টাকা দেয়। এরপর গত বছরের ১২ নভেম্বর আমি ব্যাংকের মাধ্যমেই নুরুল হুদাকে টাকাটা ফেরত দেই। অথচ বিভাগের চাকরির নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয় পরের দিন ১৩ নভেম্বর। ১৩ নভেম্বর নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন হলেও কে নিয়োগ পাচ্ছে তা সিন্ডিকেটে পাস হয় ১৭ নভেম্বর।

টাকা নেওয়া ও তা পরিশোধের মধ্যবর্তী সময়ে (গত বছরের ৯ নভেম্বর) নুরুল হুদার সঙ্গে অধ্যাপক হান্নানের ফোনে কথা হয়। সেই ফোনালাপে নুরুল হুদা ধার হিসেবে অধ্যাপক হান্নানকে দেওয়া টাকা কবে ফেরত পাবে তা জানতে চায়। (ফোনালাপের রেকর্ডিং প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত)।  

ধারের টাকা লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত ডিসেন্ট ট্রেডার্সের অ্যাকাউন্টটি একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্টটি প্রথমে অধ্যাপক হান্নানের নামে পরিচালিত হলেও পরবর্তীতে অ্যাকাউন্টটিতে মো. শফিকুল ইসলামের নাম যুক্ত করে যৌথ অ্যাকাউন্ট হিসেবে পরিচালিত করা হয়। অ্যাকাউন্টটি মূলত রাবি সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকায় তাদের দু’জনের নামে ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ ও অন্যান্য উৎস থেকে গৃহীত টাকা লেনদেনের সুবিধার জন্য খোলা হয়েছিল বলে জানান অধ্যাপক হান্নান।

চলতি বছরের ১ অক্টোবর চাকরিপ্রত্যাশী নুরুল হুদার স্ত্রী সাদিয়ার সঙ্গে চৌধুরী মো. জাকারিয়ার মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি রেকর্ডিং ফাঁস হয়। কথোপকথনে কত টাকা দেওয়ার জন্য রেডি আছো বলে জানতে চান চৌধুরী মো. জাকারিয়া। জানা গেছে, চাকরির নিয়োগের কয়েকদিন আগের রেকর্ডিং এটি। রেকর্ডিংটি ফাঁস হওয়ার পর চৌধুরী মো. জাকারিয়া আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন এমন অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে ৩ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে চৌধুরী মো. জাকারিয়া দাবি করেন, যে ফোনালাপ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ হয়েছে তা একটি স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক আংশিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। উল্টো তিনিই নিয়োগ-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। চৌধুরী মো. জাকারিয়া সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক হান্নানের ডিসেন্ট ট্রেডার্স’র নামে দুই লাখ টাকা জমার রশিদ, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য উপস্থাপন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।