ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বেহাত সম্পত্তি উদ্ধারের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২০
রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বেহাত সম্পত্তি উদ্ধারের দাবি প্রতিবাদ মিছিল, ছবি: বাংলানিউজ

ঝালকাঠি: ‘স্কুল বাঁচলে বাঁচবে শিক্ষা’ এ স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করে ‘রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়’-এর বেহাত সম্পত্তি রক্ষার দাবিতে এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌনমিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীসহ সচেতন রাজাপুরবাসীর আয়োজনে বুধবার (২২ জুলাই) বেলা ১১ টায় রাজাপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকেে এ মিছিল বের করা হয়।

পরে মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে বিদ্যালয়ে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সহস্রাধিক মানুষ মুখে কালো কাপড় বেঁধে অংশ নেন।

এসময় বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জিব কুমার বিশ্বাস, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান মোল্লা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ আলম নান্নু, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী নাজমিন সুলতানা পাখি প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আমরা সবাই আন্দোলন করছি, বিদ্যালয়ের বেহাত হওয়া সম্পত্তি উদ্ধার করতে। বিদ্যালয়ের এক ইঞ্চি জমিও বেদখলে থাকা চলবে না। প্রয়োজনে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত যাবো। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেহাত হওয়া সম্পত্তি উদ্ধারে যদি তৎপর না হয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

জানা যায়, উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সুদীর্ঘ প্রায় ৯৪ বছর যাবৎ গৌরব ও ঐতিহ্য নিয়ে এ অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে। কালের বিবর্তনে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ লিজ প্রদান ও বেদখলের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের জায়গা সংকুচিত হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানান, বিদ্যালয়ের প্রায় ৯ একর সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৬৭ শতাংশ জমিতে ৫টি বহুতল ভবন নির্মাণ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এ বিপুল সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহলের। তারা সম্পত্তি আত্মসাৎ করতেই বিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সংকুচিত করে একটি কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত করেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের সাহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের পিটি-প্যারেড করার জায়গাটুকুও নেই। বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বিভিন্ন সময় বেআইনিভাবে লিজ দিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে প্রভাবশালী ওই মহলটি। তাই গত দুই মাস ধরে বিদ্যালয়ের বেহাত হওয়া সম্পত্তি উদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।

তারা আরও জানান, বিদ্যালয়ের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা ও সব সম্পত্তি রক্ষার জন্য বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের পেছনের উত্তর পার্শ্বের খাল পর্যন্ত জমিটির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে একাডেমিক কার্যের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করা, আফসার আলী আকন শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তনের ভাড়া বাতিল করে পুনরায় মিলনায়তনটি চালু করা, বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠের সংকোচন রোধ ও খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তাদের।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি লিজ দেওয়ার কোনো বিধান নেই। বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে লিজ দেওয়া সম্পত্তিগুলো আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যামে আমরা উদ্ধার করবো। বিদ্যালয়ের সম্পত্তি উদ্ধার আন্দোলনের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে সহমত পোষণ করছি।

বিদ্যালয়ের সম্পত্তি রক্ষা ও বেহাত হওয়া সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের দাবিতে গত ১৫ জুন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারী বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। ওই মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে বিদ্যালয়ের সবসম্পত্তি রক্ষা ও বেহাত হওয়া সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ১ মাসের সময় ১৫ জুলাই পর্যন্ত বেধে দেওয়া হয় বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এরই মধ্যে গত ২৪ জুন সংবাদ সম্মেলন করে ১১ দফা দাবি পেশ করা হয়। পরে ২ জুলাই মতামত সংগ্রহ ও প্রতিবাদী গণস্বাক্ষর কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২০
এমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।