ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘কলিমউল্লাহর অভিযোগ অসত্য, দুর্নীতির বিষয়ে সভা শিগগিরই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২১
‘কলিমউল্লাহর অভিযোগ অসত্য, দুর্নীতির বিষয়ে সভা শিগগিরই’

ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে এসেছে এবং সে বিষয়ে শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বেরোবি ভিসি রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদসম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে নিয়ে বিষোদগার করেন।

পরে বিকেলে মন্ত্রণালয় থেকে ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য’ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এতে বলা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য রেখেছেন তার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

তার বক্তব্য সম্পর্কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য নিম্নরূপ:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নানা ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বরাবর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

ইউজিসি তাদের নিয়মানুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণে তদন্ত সম্পন্ন করে মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠায়। ইউজিসি একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বিধায় এ প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

‘কলিমউল্লাহ সরাসরি শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য রেখেছেন, যা নিতান্তই অনভিপ্রেত। তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে যে সভাটিতে মন্ত্রীর দেরিতে উপস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন, সে সভাটি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সকালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সভাটির সময় পরিবর্তন করে বিকেলে নেওয়া হয়। ওই একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের অভিন্ন ন্যূনতম নির্দেশিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত আরেকটি সভা থাকায় উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনার আগে হলে ভালো হয় বিবেচিত হওয়ায় উপাচার্যদের সঙ্গে সভাটির সময় পরিবর্তন করা হয়েছিল।

শিক্ষক নিয়োগের অভিন্ন ন্যূনতম নির্দেশিকার সভাটি নির্ধারিত সময়ের চেয়েও অনেক প্রলম্বিত হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী, সচিব এবং ইউজিসির চেয়ারম্যানসহ উপাচার্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় যোগ দিতে দেরি হয় এবং মন্ত্রী উপস্থিত সবার কাছে অনিচ্ছাকৃত এ বিলম্বের জন্য বিশেষভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। মন্ত্রীর সময়ানুবর্তিতার বিষয়টি সবার কাছে সুবিদিত। তিনি সময়মতো সব সভায় অংশ নেন। সেদিনের সবারই অনিচ্ছাকৃত বিলম্বকে নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেরোবি উপাচার্য যে বক্তব্য রেখেছেন, তা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনকই নয়, নিতান্তই রুচি বিবর্জিত।

আরও বলা হয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকাশনার জন্য মন্ত্রীর একটি বাণী একবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাওয়া হয়েছিল। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বড় ধরনের ছাত্র আন্দোলন চলছিল। সে পরিস্থিতিতে মন্ত্রী সে বাণীটি দেওয়া সমীচীন মনে করেননি এবং এরপরে বিগত এক বছরে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মন্ত্রীর কাছে আর কোনো বাণী চাওয়া হয়নি।

বেরোবি উপাচার্য উপরোক্ত বিষয়গুলোর বাইরেও মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার কথা উল্লেখ করে রাজনীতিকে জড়িয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোনো বিষয়ের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে বলা হয়, বেরোবি কলিমউল্লাহ সংবাদস ম্মেলনে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে যেসব বক্তব্য রেখেছেন, সেসব বিষয়েও কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে মন্ত্রণালয়। কারণ তার বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে ইউজিসি থেকে পাঠানো হয়েছে। সে বিষয়ে শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে।

'এমতাবস্থায় কলিমউল্লাহর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া অন্যান্য সব বক্তব্য সম্পর্কে মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও বিবেচনার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় বক্তব্য উপস্থাপন করবে। '

অন্যদিকে, ভিসির বক্তব্যের পরপরই তাকে ওই ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করে একটি সংগঠন।

রোকেয়ার ভিসি ঢাকায় একটি লিঁয়াজো অফিস খুলে সেখান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করায় তার বিরুদ্ধে সমালোচনা ছিল। সার্বক্ষণিক অভিভাবক হিসেবে নিয়োগের শর্ত দেওয়া হলেও মাঝেমধ্যে প্লেনে করে রংপুরে গিয়ে আবারও ঢাকায় চলে আসায় কার্যত অভিভাবকহীন ছিল রংপুরের এ বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২১
এমআইএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।