ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাকায় ‘আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির’ স্ট্যাডি সেন্টারটি ভুয়া

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২১
ঢাকায় ‘আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির’ স্ট্যাডি সেন্টারটি ভুয়া

ঢাকা: ঢাকায় অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ‘আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএসএ’ এর নামে ভুয়া স্ট্যাডি সেন্টার পরিচালনার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

‘লিংকনস হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান এ ভুয়া স্ট্যাডি সেন্টার পরিচালনা করছে জানিয়ে ইউজিসি স্ট্যাডি সেন্টার বন্ধে সরকারের কাছে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

ইউজিসি জানায়, অস্তিত্বহীন বিশ্ববিদ্যালয়টির নামে একটি ওয়েবসাইট (https://www.aiuedu.org/) খোলা হয়েছে এবং শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, যা ইউজিসির নজরে এসেছে।

ইউজিসি যাচাই করে দেখেছে যে, ইউএসএ’র ক্যালিফোর্নিয়ায় আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই।

কমিশনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ভুয়া স্ট্যাডি সেন্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি দেখভাল করছে লিংকনস হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
রাজধানী ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর শাহজালাল টাওয়ারে এজন্য একটি অফিস খোলা হয়েছে (http://www.aiuedu.org/index.php?page=international_collaboration)। ব্যাচেলর, মাস্টার্স, এমপিএইচ, এমবিএ, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সম্প্রতি ইস্যুকৃত বিজ্ঞপ্তিটি ইউজিসির নজরে এসেছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্পেশাল স্কলারশিপ এবং ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য পাঁচ হাজার ১০০ এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য ১০ হাজার ৬০০ ডলার নিচ্ছে।

আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ’র ওয়েবসাইটটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি ২০১৪ সালে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলা থেকে খোলা হয়েছে। আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত একটি ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এটি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রসেফর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ছাড়া বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা ক্যাম্পাস/স্ট্যাডি সেন্টার ইত্যাদিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

প্রফেসর চন্দ বলেন, অনুমতি ছাড়া বৈধ কোনো বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাডি সেন্টার পরিচালনা করা অবৈধ। এক্ষেত্রে অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা করা আইনের চরম লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে তিনি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তথাকথিত এ বিশ্ববিদ্যালয়/স্ট্যাডি সেন্টার থেকে প্রাপ্ত পিএইচডিসহ যেকোনো ডিগ্রি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

প্রফেসর চন্দ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে অস্তিত্বহীন বিদেশি এ বিশ্ববিদ্যালয়টির ভুয়া স্ট্যাডি সেন্টার বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।

এর আগে সৈয়দপুরে অস্তিত্বহীন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সতর্কবার্তা জারি করে ইউজিসি। কমিশনের দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপের কারণে অস্তিত্বহীন এ বিশ্ববদ্যিালয়টির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২১
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।