ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষিকার দাপ্তরিক কক্ষ থেকে গায়েব হয়ে গেছে পরীক্ষার নম্বরপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি।
এ ঘটনার আট দিন পর শুক্রবার (৪ মার্চ) দিনগত রাতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদেরকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিস বিভাগের প্রধান মো. আল জাবির, প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, সিকিউরিটি অফিসার রামিম আল করিম।
২৪ ফেব্রুয়ারি ত্রিশাল থানায় করা এক সাধারণ ডায়েরিতে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা নাজ স্বর্ণপ্রভা জানান, বিভাগের পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম শেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে কলা ভবনের নিচতলায় অবস্থিত ব্যক্তিগত কক্ষটি তালাবদ্ধ করে বাসায় যান। পরদিন সকাল ১০টায় তিনি ওই কক্ষে এসে দেখতে পান তার রুমের জানালার কাচ ভাঙা, অফিসিয়াল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও গোপনীয় নথি, একাধিক শিক্ষাবর্ষের গোপনীয় নাম্বারপত্র, পরীক্ষার উত্তরপত্র, উপস্থিতি রেজিস্ট্রার খাতা, পেন ড্রাইভ নেই। তবে, এ সময় সেখানে স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকলেও নেই শুধু গুরুত্বপূর্ণ সেসব নথি’।
বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সন্দেহের চোখে দেখছে জানিয়ে প্রক্টর ড. প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শোনার পর সংশ্লিষ্ট সবাইকে কল করি এবং বিল্ডিংয়ের পেছনে পাঠাই। আমি কক্ষে গিয়ে ম্যাডামের কাছে জেনেছিলাম সেখানে কী কী ছিল। একপর্যায়ে ম্যাডাম বললেন যে, সেই ব্যাগে থাকা অধিকাংশ জিনিসই নেই। যেখানে অনেক সেনসিটিভ নথিপত্র ছিল। ’
ফারজানা নাজ স্বর্ণপ্রভা বলেন, ‘এ ঘটনার দিন শিক্ষার্থীদের রিহার্সালের করাতে অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় পরদিন সকালেই অফিসে চলে আসব ভেবে আমি আমার গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো সেখানে রেখে যাই। কিন্তু রাতের ৯ ঘণ্টার মধ্যেই তা চুরি হওয়া মানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যারা করেছেন তারা নিশ্চয়ই অনেক দিন ধরে আমাকে অনুসরণ করেছেন এবং সুযোগ পেয়ে আমাকে বিপদে ফেলতেই এ কাজ করা হয়েছে। ’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাকে জানিয়েছিল যে, জিনিসগুলো মিসিং ছিল তার বেশিরভাগই তারা উদ্ধার করতে পেরেছে। পরে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারলাম আসলে সেগুলো পায়নি। যেহেতু দুইজনের কথার মধ্যে গড়মিল পাওয়া গেছে সেজন্য আমাদের তদন্ত কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। আমরা দ্রুতই অধিকতর তদন্ত করে মূল ঘটনা বের করার চেষ্টা করবো । ’
এ বিষয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, ‘এটি চুরি নাকি অন্য কোনো ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এএটি