ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ জুলাই ২০২৪, ০১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষের দিকে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
প্রাথমিক শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষের দিকে

ঢাকা: ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শেষ হওয়ার পথে। এ মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শেষ স্তুরে রয়েছে।

 

সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের ৬৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে বিটিআরসির এসওএফ তহবিলের অর্থায়নে টেলিযোগাযোগ অধিদফতর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।  

বুধবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকায় টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।  

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের ফলে আগামী পাঁচ-দশ বছর পর পৃথিবীতে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে না। প্রযুক্তিগত কারণে ডিজিটাল শিক্ষা শিশুদের জন্য যতটা বোধগম্য প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা তা পারে না। প্রচলিত শিক্ষা ডিজিটাল শিক্ষায় রূপান্তর না হলে কঠিন চ্যালেঞ্জ আমাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি আমাদের এগিয়ে যাওয়ার চালিকা শক্তি। করোনাকালে উন্নত দুনিয়ার তুলনায় আমাদের ভাল করার মূল মন্ত্রটি ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি।  

যে শিশুরা পড়তে চায় না তাদের আগ্রহ সৃষ্টিতে ডিজিটাল কন্টেন্টে পাঠদানের ফলপ্রসূ অবদান তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, শিশুরা খেলার ছলে তাদের এক বছরের সিলেবাস ২ মাসের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম হয়। নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলায় একটি ডিজিটাল স্কুলের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, শিশুদেরকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতেই হবে।  

তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে কম্পিউটার ব্যবহার করে পাঠদান করাটি আমি দেখি। সেই ধারণাকে বাস্তবায়ন করার বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো আমাদের প্রচলিত কাগজের পাঠ্যবইকে ডিজিটাল উপাত্তে রূপান্তর করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে গত ১৩ বছরে হাটি হাটি পা পা করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম ডিজিটালে রূপান্তরে সক্ষম হয়েছি। বিশ্বে বাংলা ভাষায় এ ধরনের ডিজিটাল উপাত্ত তৈরি করা এটাই প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র।  

তিনি বলেন, বিদ্যমান শিক্ষা শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দের না। প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা ডিজিটাল মানবসম্পদ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবদুল মোকাদ্দেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিজিটাল কনটেন্ট বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজয় ডিজিটাল লিমিটেডের সিইও জেসমিন জুই। অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল ওহাব এবং টেশিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান হাবিব তফাদার বক্তৃতা করেন।

মূল প্রবন্ধে জেসমিন জুই শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে মানসম্মত ডিজিটাল কন্টেন্টের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, একটি ভাল কনটেন্ট শিশুদের প্রতিভা বিকাশে ফলপ্রসূ অবদান রাখবে। তারা খেলার ছলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে শেষ করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, উন্নত জাতি বিনির্মাণে মানসম্মত ডিজিটাল শিক্ষার জন্য মান সম্মত একটি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। গত ১৩ বছরে বিজয় ডিজিটাল কনটেন্ট সে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।  

অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের এই কর্মসূচীকে একটি অভাবনীয় উদ্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং প্রকল্পটি কেবল ৬৫০টি বিদ্যালয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সহায়তা প্রত্যাশা করেন। মন্ত্রী তাদেরকে এই বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস ব্যক্ত করেন।  

তারা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষের সঙ্গে ডিজিটাল কন্টেন্ট শিক্ষাথীদের জন্য একটি বড় সুযোগ। এ থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় এ বিষয়েও তারা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

পরে মন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
এমআইএইচ/এসএ 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।