গাইবান্ধা: বহুল আলোচিত গাইবান্ধা-৫ ফুলছড়ি-সাঘাটা আসনের উপ-নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। হাড় কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে দিন-রাত ছুটে চলেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
সোমবার (২ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। আগামী ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এ আসনের স্থগিতকৃত উপ-নির্বাচন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনেরমতো শেষ দিনেও ভোর থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাচ্ছেন এলাকাবাসীর কাছে।
পাশাপাশি মাইকে গান-বাজনার মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। প্রচার-প্রচারণের সব সময় এগিয়ে নৌকা ও লাঙ্গলের প্রার্থী। মূলত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের নৌকা ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম শহীদ রনজু লাঙ্গল প্রতীকের মধ্যেই লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তবে, এলাকার উন্নয়নের জন্য যে প্রার্থী বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে জানান তারা।
নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, নির্বাচনে ভরাডুবির ভয়ে গত ১২ অক্টোবর বিরোধী প্রার্থীরা পরস্পর যোগসাজস করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরই নির্বাচন কমিশন উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেন। ৪ জানুয়ারি সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার মানুষ তাদের উন্নয়নের স্বার্থে তাকেই নির্বাচিত করবেন বলেও মনে করেন রিপন।
অপর দিকে, লাঙ্গলের প্রার্থী গোলাম শহীদ রনজু বলেন, ১২ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন কেন ভোট বন্ধ ঘোষণা করেন তা সবাই জানেন। নির্বাচন কমিশন এবার সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে বলে প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়, ভোটাররা যদি তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন তবে, গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতোই বিপুল ভোটে লাঙ্গল বিজয়ী হবে।
সাঘাটা উপজেলায় ৮৮টি এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৫৭টিসহ মোট ১৪৫টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে বুধবার (৪ জানুয়ারি)।
এবারও প্রতিটি কেন্দ্র থাকছে ইভিএমে ভোট গ্রহণ ও প্রতিটি কেন্দ্র থাকছে সিসি ক্যামেরার আওতায়।
সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটিসহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে মিলে ভোটার রয়েছেন তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৭০ হাজার ১৬০।
এদিকে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় ইসি। সম্প্রতি গাইবান্ধায় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
প্রসঙ্গত জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ ফুলছড়ি-সাঘাটা আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন অনিয়মের অভিযোগ এনে সবগুলো কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি তদন্ত করতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আলোচিত এই উপ-নির্বাচনটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পরে ৪ জানুয়ারি ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২২
এসআইএস