ঢাকা: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনগুলোর সীমানার খসড়া চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই খসড়ার ওপর সংশ্লিষ্ট এলাকার যেকোনো ব্যক্তি দাবি-আপত্তি জানানোর সময় পাবেন ২০ দিন।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। কালকের মধ্যে গেজেট হয়ে যাবে। এখানে নতুন কিছুই নেই। ২০১৮ সালে যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটাই অক্ষুণ্ন রয়েছে। শুধু প্রশাসনিক কারণে নামের পরিবর্তন হয়েছে অথবা প্রশাসনিক বিভক্তি যেগুলো হয়েছে, সেগুলো পুরনো নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম দিয়ে করা হয়েছে। কোনো পরিবর্তন নেই। সম্ভবত পাঁচ-ছয়টা এ ধরনের হতে পারে। কমিশন অনুমোদন করেছে। এখন সচিব এটি গেজেট করবেন।
সাবেক ওই ইসি সচিব বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে আরও বছরখানেক সময় লাগবে। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তাই আমরা অপেক্ষা তো করতে পারছি না। তারা খসড়া যেটা দিয়েছে সেটা আমলে নিয়েছি। তবে প্রশাসনিক অখণ্ডতা এবং ভৌগলিক বিষয়টাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।
এটা প্রকাশ করার পর যদি জনপ্রতিনিধি বা স্থানীয় সমস্যা মনে করেন, ২০ দিন সময় দেবো, তারা আবেদন করতে পারবেন। প্রত্যেকটি আবেদনই আমরা শুনানি করবো। তাদের বক্তব্য যদি সঠিক হয়, কেউ যদি বিরোধিতা না করেন এবং আমাদের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে তাদের বক্তব্য যৌক্তিক, তখন হয়তো আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। এছাড়া কোনো পরিবর্তন হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আগে একটা উপজেলা ছিল এখন দুইটা উপজেলা হয়েছে, এমন ক্ষেত্রে আমরা নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। আর কোনো পরিবর্তন আনিনি। কোনো রাজনীতিবিদ বা যে কেউ এই ক্ষেত্রে সীমানা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই কমিশার বলেন, দেশের যে জন সংখ্যা এতে প্রতি আসনে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ভোটার। আর জনসংখ্যার হিসেবে যদি আসনের সীমানা করি তাহলে দেখা যাবে যেকোনো কোনো জেলায় একটা আসন হবে। আবার কোনো কোনো জেলা থেকে আসন কেটে এনে অন্য জেলায় দিতে হবে। যেমন ঢাকায় যদি পাঁচ লাখ ৫০ হাজারের ভিত্তিতে দিই, তাহলে আরও ১০টা আসন বাড়াতে হবে। গাজীপুরে পাঁচটা, চট্টগ্রামে দুইটা, খুলনায় মনে হয় দুইটা বাড়াতে হয়, রাজশাহীতে বাড়াতে হয়। এভাবে যদি সব শহরে চলে আসে আসন, তাহলে অন্য জেলায় তো আসন হারাবে। একজন সংসদ সদস্যের পক্ষে জনসংখ্যার আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্য কাজ করবেন, কীভাবে করবেন। এজন্যই প্রশাসনিক ও ভৌগলিক অখণ্ডতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আইনেও তাই বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি যে শহর এলাকায় যে উন্নয়ন এতে সেবা দেওয়ার জন্য অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। বরং গ্রাম অঞ্চলে ওই সব সুযোগ-সুবিধা অনেক কম। সেখানে মাননীয় সংসদ সদস্যের ভূমিকা অনেক বেশি। জনসংখ্যাকে প্রাধান্য দিয়ে কোনো পরিবর্ত আনা হয়নি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর আরো বলেন, দরখাস্ত করলে সময় দেবো। সেদিন আসবেন তারা। বক্তব্য যৌক্তিক হলে মেনে নেবো। যাই হোক না কেন জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করবো। ইতোমধ্যে যেসব আবেদন পড়েছে, বেশির ভাগই এসেছে পরিবর্তন না করার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
ইইউডি/এএটি