ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দেশে ফাঁসির আইন আছে, তাই বলে কি খুন বন্ধ, প্রশ্ন রাশেদার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৩
দেশে ফাঁসির আইন আছে, তাই বলে কি খুন বন্ধ, প্রশ্ন রাশেদার নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা । ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশে ফাঁসির আইন আছে দেশে। তাই বলে কি খুন বন্ধ আছে? তাতো না।

 নির্বাচনী অপরাধ নির্মূলের প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা এমন মন্তব্য করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।  

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব পাস হলে, এর প্রয়োগের বিষয়ে সাবেক জেলা জজ রাশেদা সুলতানা বলেন, এটি পাস হলে কমিশন, যারা ফিল্ডে কাজ করবে, প্রত্যেকের জন্য খুব ভালো একটি কাজ হবে। আমাদের জন্য অনেকটাই ভালো হবে। বাংলাদেশ থেকে সবকিছু (নির্বাচনী অপরাধ) নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে অনেকটাই কমবে বলে আশা করি। শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব হবে না। ফাঁসির আইন আছে দেশে, তাই বলে কি খুন বন্ধ আছে, হা হা হা...। তাতো না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর ভোট বাতিলের ক্ষমতা দেওয়াসহ বেশকিছু বিধান আনতে আরপিও সংশোধনে ইসির প্রস্তাবটি আগামী ২৮ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে উঠবে। মন্ত্রিপরিষদে পাস হলে সংসদে যাবে। সংসদ যেভাবে পাস করে দেবে, সংযোজন হলেও হতে পারে, জানি না।

তিনি আরও বলেন, সংশোধনী প্রস্তাব পাস হলে যুগান্তকারী আইন হবে। প্রার্থী, সমর্থক সবার আচরণগত পরিবর্তন হবে। এক বছরের মতো হলো আইনটা (সরকারের কাছে) পাঠানো হয়েছে। যে অপরাধগুলোকে অপরাধ হিসেবে ছিল না, আমরা সেগুলোকে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধানের সুপারিশ করেছি।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ইকুইপমেন্ট কেড়ে নেয়, সেটিও অপরাধের আওতায় আসবে। সঙ্গত কারণেই যারা এ কাজ করবে আইনটা হলে, একটু হলেও মনের মধ্যে খটকা লাগবে, যে আমি এই কাজ করছি, আমাকেও তো আইনের আওতায় আনা হবে। দশজনের না হোক দুজনের হলেও তো হলো। এতে যদি ক্ষান্ত হয়, এটাও তো বড় অর্জন মনে করি।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবে ভোটারদের বাধা দেওয়ার বিষয়টি আছে। তারপর আরও অনেকগুলো, কী কী সব আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ফলে যদি ম্যালপ্র্যাকটিস নজরে আসে, সেখানে কিন্তু কমিশন বন্ধ (নির্বাচন) করার ক্ষমতা যেন থাকে সে বিষয়টাও কিন্তু আছে। এগুলো আসলে নির্বাচনে একটা ছাপ ফেলবে।

আইন পাস হলে প্রয়োগ করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমাদের যতটুকু দরকার, করতে পারব। বাকিটা তো বিচারের প্রক্রিয়ায় চলে যাবে। সেগুলো করতে গিয়ে নানাভাবেই আইনটি জনগণের প্রত্যাশিত জায়গায় যায় না প্রমাণ না থাকার কারণে। এতে খালাস পেয়ে যায়, এটি আইনেরই প্রক্রিয়া।

তিনি বলেন, আমরা কিন্তু অতীতে প্রয়োগ করেছি। এলেঙ্গা পৌরভোটে মারামারি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। কেবল এলেঙ্গায় নয় অনেক জায়গায় আমরা অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আইন না জানাও কিন্তু একটি অপরাধ। কোনো আইন পাস হলে যখন গেজেট হয়ে যায়, তখন প্রাপ্তবয়স্ক কেউ বলতে পারবে না যে আমি জানি না। জনে জনে, ঘরে ঘরে গিয়ে তো আর আইন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব না। গেজেট হয়ে গেছে, ধরে নিতে হবে সবাই জানে।

সংলাপের বিষয়ে বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, সংলাপ কাজের সুবিধা জন্য হয়। এটি করার জন্য আইনে কিছু বলা নেই। এটুকু বলতে পারি, প্রয়োজন হলে নিশ্চয় আবার আমরা বসব।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউকে ভোটের মাঠে দাঁড় করিয়ে, মানে আনতেই হবে, তা কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাজ না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের আহ্বান করে থাকি, করতে পারি। কিন্তু তারা আসবে কি, আসবে না, আনতেই হবে; এটি কিন্তু আমাদের কাজও না। এটিই হলো আসল কথা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৩
ইইউডি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।