খুলনা: আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধ এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রতিরোধে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছেন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
শুক্রবার (২৬ মে) খুলনায় চার মেয়র প্রার্থীসহ ১৭৯ জনকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে প্রচারণার লড়াইয়ে নেমেছেন প্রার্থীরা।
আর এ কারণে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কোথায় কার দায়িত্ব:
মো. আলাউদ্দীন জানান, নগরীর ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন ফুলতলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইউসুফ। ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে দিঘলিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান। ৭, ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন খুলনার সহকারী কমিশনার সৈয়দ রেফাঈ আবিদ। ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী কমিশনার অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী। ৯, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার এস এম শাহনেওয়াজ মেহেদী।
এছাড়া ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ভূপালী সরকার। ১৯, ২০ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করবেন খুলনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলাম। ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন খুলনার সিনিয়র সহকারী কমিশনার সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া। ২৪, ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সহকারী কমিশনার রুপায়ন দেব এবং ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন রুপসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ হোসেন।
খুলনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রত্যেককে ৩ থেকে ৪টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া আছে। সেই সঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গে ট্যাগ করানো আছে। পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্সও থাকবে। প্রার্থীদের আচরণবিধিতে যেসব বিষয় উল্লেখ রয়েছে, সেগুলো কেউ লঙ্ঘন করছে কিনা, যদি কেউ করে থাকে প্রাথমিকভাবে তাদের ডেকে আমরা সতর্ক করছি। প্রার্থী, তাদের এজেন্ট ও দায়িত্বশীল যারা রয়েছেন, তাদের আমরা সতর্ক করছি। পরবর্তীতে যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করে, সেক্ষেত্রে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
কেসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং আমরা বদ্ধপরিকর। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হচ্ছে আচরণবিধি মেনে চলা। প্রার্থীরা যদি নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলেন, তাহলে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব প্রার্থী যেন নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে নির্বাচনী প্রচারণা করেন, সেই আহ্বান জানাচ্ছি।
কেসিসি রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ভোটের ৩২ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত আচরণবিধি দেখভালের জন্য ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচনী এলাকায় মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করবেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় কিনা। যদি কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবারের কেসিসি নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডে ১৩৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩।
আগামী ১২ জুন দ্বিতীয় ধাপে এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ২৮৯টি কেন্দ্র ও ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। নির্বাচন কমিশন এগুলো সার্বক্ষণিক মনিটর করবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
এমআরএম/এনএস