ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ জুলাই ২০২৪, ০১ মহররম ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

জীবন গেলেও ভোটের মাঠ ছেড়ে যাব না: জাপা প্রার্থী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
জীবন গেলেও ভোটের মাঠ ছেড়ে যাব না: জাপা প্রার্থী

সিলেট: জীবন চলে গেলেও ভোটের মাঠ ছেড়ে যাবেন না বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।

তিনি বলেন, এবার সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লাঙল প্রতীক হাতে ওঠার পর থেকে তাকে চাপের মুখে রাখা হয়েছে।

জাপার নেতাকর্মীদের চোখ রাঙানো হয়েছে। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে পরিবেশ আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠেছে। তবে বরিশাল সিটি নির্বাচনের দিন প্রধান প্রধান কমিশনারের একটি মন্তব্যে নিজেও আতঙ্কে আছি।

বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে নগরের কুমারপাড়াস্থ নির্বাচনী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম বাবুল আরও বলেন, ভোটের মাঠে আমাকে নানাভাবে নাজেহাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তৈরি করা ভুয়া ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয়ের বিষয়টি অনুধাবন করে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা সিলেটে এ নগ্ন খেলায় মেতে ওঠেছে। নগরবাসী বিষয়টি বুঝতে পেরে দুর্বার গতিতে লাঙলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

তিনি বলেন, সিলেটে লাঙলের জোয়ার ওঠেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা সত্ত্বেও জনতার জোয়ারে এবার সিসিকে লাঙলের জয় হবে-ইনশাহআল্লাহ। তবে বরিশালের ঘটনার পর সিইসি একজন প্রার্থী সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বক্তব্য শুনে আমি বিস্মিত ও আতঙ্কিত। সিইসির যেখানে নিরপেক্ষ মাঠ প্রস্তুত রাখার কথা, সেখানে তিনি সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সাফাই গাইছেন। সিলেট সিটি নির্বাচনে কি হয় আল্লাহ জানে।

বরিশালে ভোটের দিন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওইদিন ঢাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'বরিশালে মেয়র প্রার্থী রক্তাক্ত হয়েছেন কি না, আমরা জানি না। এখন সবকিছু তো আপেক্ষিক। উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? যতটুকু জেনেছি, কেউ পেছন থেকে তাকে ঘুসি মেরেছেন। আমরা সেটা দেখেছি, ওনার কিন্তু রক্তক্ষরণ দেখিনি। সিইসির এমন মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার মুখে বুধবার এ নিয়ে নিজের আতঙ্কের কথা বললেন সিলেটে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী।

বাবুল বলেন, আমাদের কর্মসূচিতে নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে পরিস্থতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে বারবার অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। মাঠে থাকা প্রশাসন বরং আমার ওপরই কড়াকড়ি আরোপ করছে। আর নৌকার প্রার্থী প্রতিদিন আচরণবিধি লঙন করে প্রচার চালাচ্ছেন।

বাবুল বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার অভিযোগ এনে সিলেটে নির্বাচন বর্জন করেছেন বিএনপি নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসানও সরে দাঁড়িয়েছেন। এখন টার্গেট আমি। আমাকে সরানোর চেষ্টা চলছে। তবে জীবন গেলেও ভোটের মাঠ ছাড়ব না। চলমান সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে দেশ-বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। নতুবা সিলেটের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে নিয়ম বেঁধে দিয়েছে, তা তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোর পর্যন্ত নির্বাচনী পথসভা, গণসংযোগ, মিছিল-মিটিং অব্যাহত রেখেছেন। তাছাড়া আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান হলফনামায় তথ্য ও জন্ম তারিখ ভুল দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আবু হুরায়রা সাজু রিটানিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া এবং জালিয়াতি ফৌজদারি আইনে অপরাধ। এ কারণে প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

এদিকে, দুইদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নজরুল ইসলাম বাবুলের একটি ‌ব্যক্তিগত ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার মধ্যে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাবুল।

এ ভিডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি ভুয়া ভিডিও ফেসবুকে ছড়ানো হয়েছে। এতে এডিট করে আমার ছবি যুক্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই এটি ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ তার।

 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।