ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

মাদারীপুর-৩

নির্বাচনে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের নৌকার পক্ষে বৈঠক, ৩৭ জনকে অব্যাহতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩
নির্বাচনে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের নৌকার পক্ষে বৈঠক, ৩৭ জনকে অব্যাহতি

মাদারীপুর: মাদারীপুর-৩ আসনে নির্বাচনে ভোট গ্রহণে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের নিয়ে নৌকার পক্ষে বৈঠক করায় ৩৭ জন শিক্ষককে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই বৈঠকের ৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের এরকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পরেছে।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে মাদারীপুর-২ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বাসভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরাও উপস্থিত ছিলেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মাদারীপুর-৩ আসনে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ছোট ভাই ওবায়দুর রহমান খান বক্তব্য দিচ্ছেন। পাশে বসা ছিলেন শাজাহান খান।  

ওবায়দুর রহমান খানের বক্তব্যে তাকে বলতে শোনা গেছে, আপনাদের প্রাণপ্রিয় নেতা শাজাহান খান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্বারা নির্দেশিত হয়েছেন যে তিনের (মাদারীপুর-৩) আসনের উপরে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য এবং তিনের প্রচার চালানোর জন্য। সেই হিসেবে আমরা কিন্তু তিনের উপরে বেশি দায়িত্ব পালন করতেছি। আপনাদেরও তিনে সেই ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনে যদি আমরা গোলাপ ভাইকে নির্বাচিত করতে পারি। তাহলে দাদায় (শাজাহান খান) ও গোলাপ ভাই মিলে দীর্ঘদিনের জন্য মাদারীপুরকে স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসতে পারবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষকরা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে সভার কথা বলে উপজেলা চেয়ারম্যান হঠাৎ আমাদেরকে তাদের বাসায় ডেকেছে। তিনি আমাদের মাদারীপুর সদর উপজেলা শিক্ষক সমাজের সভাপতি। সভাটি হওয়ার কথা ছিল উপজেলা পরিষদে। কিন্তু সেটা না হয়ে এমপি (শাজাহান খান) মহোদয়ের বাসায় মিটিং হয়েছে।

এই বিষয়ে মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহিন বলেন, মাদারীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাজাহান খান তার নির্বাচনী এলাকার পছন্দের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্ট করার অপচেষ্টা করছে। যেহেতু সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন আমাদের মাদারীপুর-৩ আসনের মধ্যে পড়েছে। তাই সে সেখানে নিজের প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শাজাহান খানের নির্বাচনী এলাকার কোন লোককে প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা যাতে না হয়, সেই জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আর ২৬ ডিসেম্বর শাজাহান খানের বাসায় যে সকল শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করেছে, তারা সবাই শাজাহান খানের কর্মী। তারা নির্বাচনে কোন দায়িত্ব পালন করলে সেখানে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাই তাদেরসহ আরো যারা আছে, সবাইকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও থেকে পোলিং ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হলে আশা করি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিম বলেন, যারা ঐ মিটিং ছিলেন আমাদের স্যার তাদের সবাইকে শোকজ করেছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহমদ আলী জানান, বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার নজরে আসার সাঙ্গে সাঙ্গেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে এবং আগামী ২ দিনের মধ্যে তদন্ত করে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বাংলদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬,২০২৩
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।