নওগাঁ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর ৫টি আসনের ১৯ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এই ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ২৯ জন প্রার্থী।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কোনো প্রার্থী যদি মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পান তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সেই হিসেবে, নওগাঁ-১ আসনের ২জন প্রার্থী, নওগাঁ-৩ আসনে ৫জন, নওগাঁ-৪ আসনে ৪জন, নওগাঁ-৫ আসনে ২ জন ও নওগাঁ-৬ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় প্রত্যেকের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নওগাঁ-১ আসনে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাধন চন্দ্র মজুমদার নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯০০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেকুজ্জামান তোতা ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৭২৯ ভোট। এছাড়াও অন্য দুই প্রার্থী আকবর আলী (জাতীয় পার্টি) পেয়েছেন ৫ হাজার ২৫টি ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) মাজেদ আলী পেয়েছেন ২ হাজার ১১৬টি ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৬১ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬। ফলে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় দুই প্রার্থী আকবর আলী (জাতীয় পার্টি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) মাজেদ আলীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নওগাঁ-৩ আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদার পেয়েছেন ৬০ হাজার ৫১টি ভোট। এছাড়াও মাহবুব-উল মান্নাফ কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩৩১ ভোট, মাহফুজা আকরাম চৌধুরী (ঈগল) ১২ হাজার ৭৮৬ ভোট, মাসুদ রানা (লাঙ্গল) ৩ হাজার ৪৪১ ভোট, শামিনুর রহমার ওরফে চিকন আলী (কেটলি) ১ হাজার ৭০১ ভোট, সোহেল কবির (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন ৫৯৭ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৯০৬জন। ভোট পড়ে ২ লাখ ২৫ হাজার ৬৭৭। তাই এ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় ৫ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নওগাঁ-৪ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এখানে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্রুহানি সুলতান মামুদ গামা আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাহিদ মোর্শেদকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ব্রুহানি সুলতান মামুদ গামা পেয়েছেন ৮৫ হাজার ১৮০ ভোট আর নাহিদ মোর্শেদ পেয়েছেন ৬২ হাজার ১৩২ ভোট। এছাড়াও কয়েকবারের সংসদ সদস্য ইমাজ উদ্দিন এবার নৌকা প্রতীক না পেয়ে ঈগল মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ১১ হাজার ১৯০ ভোট। এ আসনের আরও তিন প্রার্থী আফজাল হোসেন (কাঁচি) ৩৭৫ ভোট, আব্দুর রহমান (বাংলাদেশ কংগ্রেস) ৪৬৭ ভোট, আলতাফ হোসেন (জাতীয় পার্টি) ৪৪০ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ১৯ হাজার ১৭৫। সেখানে ভোট পড়ে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫ ভোট। সেই হিসাবে ইমাজ উদ্দিনসহ ৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নওগাঁ-৫ আসনে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল জন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭১ টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণ পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৮৪টি ভোট। এছাড়াও অন্য দুই প্রার্থী আজাদ হোসেন মুরাদ (মশাল) পেয়েছেন ৭২৮ ভোট ও ইফতারুল ইসলাম বকুল পেয়েছেন ১ হাজার ৯১৩ টি ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৪ জন। ভোট পড়েছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯০ ভোট। এই আসন থেকে ২ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নওগাঁ-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৮ জন প্রার্থী। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলালকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাড.ওমর ফারুক সুমন। ওমর ফারুক সুমন পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৭১৭ ভোট আর আনোয়ার হোসেন হেলাল পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭১টি ভোট। এছাড়াও এই আসনে খন্দকার ইন্তেখাব আলম (আম) ১৯৯ ভোট, জাহিদুল (ঈগল) ৩৩১ ভোট, আবু বেলাল হোসেন (লাঙ্গল) ৫৮১ ভোট, নওশের আলী (কাঁচি) ২ হাজার ২৪৩ ভোট, পিকে আব্দুর রব সোনালী আঁশ) ২৮৮ ভোট, ও আব্দুস সাত্তার (ডাব) পেয়েছেন ২০৬ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিলেন ছিল ৩ লাখ ২৭ হাজার ৯৭৩জন। ভোট পড়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬০টি। তাই এ আসন থেকে ৬ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
উল্লেখ্য নওগাঁয় ৬টি সংসদীয় আসন হলেও নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক মৃত্যুবরণ করায় ওই আসনের ভোট গ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে ওই আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৪
এসআইএস