ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বাতেনের আয়কর বকেয়া ৩৩ লাখ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৪
চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বাতেনের আয়কর বকেয়া ৩৩ লাখ!

পাবনা: আসন্ন পাবনার বেড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই সাবেক পৌর মেয়র মো. আব্দুল বাতেন।  

তিনি প্রায় ৩৩ লাখ টাকা আয়কর বকেয়া রেখেই চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আয়কর কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এরপরও তিনি কীভাবে বৈধ প্রার্থী হলেন, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালচনা।

তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলছেন, প্রার্থীর বৈধতা যাচাই বাছাইয়ে নিয়ম অনুসারে আয়কর সনদ দেখা হয়। আব্দুল বাতেন আয়কর সনদ জমা দিয়েছেন। ফলে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়নি।

আয়কর সার্কেল-১১ (কাশিনাথপুর) কার্যালয় থেকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ-কর কমিশনার মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উপজেলাটিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া মোট ১১ প্রার্থীর আয়কর সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বাতেনের ৩২ লাখ ৮২ হাজার ৩২১ টাকা আয়কর বকেয়া রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

উপ-কর কমিশনার মো. সাইফুর রহমান চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে এ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকেই প্রার্থীদের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল। আমরা প্রার্থীদের আয়করের তথ্য তাদের দিয়েছি। আব্দুল বাতেনের বকেয়া কর রয়েছে কয়েক বছর আগের। তাকে কর পরিষোধের জন্য চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তিনি এ করের টাকা কমাতে আপিল করেছেন।  

এ নিয়ে তিনি আরও বলেন, সনদের সঙ্গে সঠিকভাবে কর পরিশোধের কোনো সংযোগ নেই। কেউ আয়কর রিটার্ন জমা দিলেই তিনি আয়কর সনদ পেতে পারেন। আব্দুল বাতেন সাহেবও রিটার্ন জমা দিয়ে সনদ পেয়েছেন। কিন্তু তার সম্পদ ও আয় অনুযায়ী কর বকেয়া রয়েছে।  

এ বিষয়ে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আব্দুল বাতেনের প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আফজাল হোসেন বলেন, যেখানে বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে প্রার্থিতা বাতিল হয়, সেখানে এত টাকা আয়কর বকেয়া রেখে কীভাবে তিনি বৈধ প্রার্থী হলেন- এটি বুঝতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা অবশ্যই তদন্ত করে দেখবেন।

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রেজাউল হক বাবু বলেন, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তিনি এটি কর্ণপাত করেননি, এড়িয়ে গেছেন। আইনের বিষয়টি তিনিই ভালো জানেন। তবে এত টাকা আয়কর বকেয়া থাকার পরও প্রার্থীর বৈধতা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে।  

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বাতেন বলেন, আমার কোনো আয়কর বকেয়া নেই। যিনি চিঠি দিয়েছেন, তাকে জিজ্ঞাসা করে দেখেন, কোন বছরের বকেয়া আমার। ১৯৭৮ সাল থেকে আমি নিয়মিত আয়কর পরিশোধ করে আসছি। আমার প্রতি বছরের আয়কর সনদ রয়েছে। তবে কেউ আমার প্রার্থিতা বাতিলের জন্য ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ তুলতে পারে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।

জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিধিমালায় আয়করের সনদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখানে আয়কব বকেয়া নিয়ে কিছু বলা নেই। আব্দুল বাতেন মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে তার সর্বশেষ কর দেওয়ার সনদ জমা দিয়েছেন। ফলে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।