ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ঢাকা-১ আসনে বিএনপির কেউ নেই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৮
ঢাকা-১ আসনে বিএনপির কেউ নেই

ঢাকা: দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হতে পারে এমন ধারণা থেকে সিনিয়র কিছু নেতার আসন ছাড়া বাকি আসনগুলোতে দুই থেকে ছয়জন করে প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু সেই তরিকাও ব্যর্থ হয়েছে ঢাকা-১ আসনে (ঢাকা জেলার দোহার এবং নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ঢাকা-১ আসন)।

রোববার (০২ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া দু’জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। অর্থাৎ এ আসনে ধানের শীষের কোনো প্রার্থী থাকছে না আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে।

জানা গেছে, ঢাকা-১ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছিলেন চারজন প্রার্থী। তারা হলেন- ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি ফাহিমা হোসাইন জুবলী ও নাজমুল হুদার সাবেক প্রেস সেক্রেটারি তারেক হোসেন।

এর মধ্যে থেকে গত ২১ নভেম্বর মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাৎকার দেন তিনজন। এদের তিনজনকেই মনোনয়নপত্র জমার চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। চিঠির তালিকায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদার নাম এক নম্বরে থাকলেও তিনি চিঠি পাননি। ২৭ ডিসেম্বর রাতে গুলশান কার্যালয় থেকে খন্দকার আবু আশফাক ও ফাহিমা হোসাইন জুবলীকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু অন্তরা হুদাকে ওইদিন চিঠি দেওয়া হয়নি। পরের দিন ২৮ নভেম্বর সকালে অন্তরা হুদার প্রতিনিধি দিনভর গুলশান কার্যালয়ে দেন দরবার করলেও ‘রহস্যজনক’ কারণে তাকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ওইদিন (২৮ নভেম্বর) গুলশান বিএনপি কার্যালয়ের কর্মকর্তা জেডএ খান রিয়াজ উদ্দিন নসুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অন্তরা হুদাকে কেন চিঠি দেওয়া হয়নি এটা আমি বলতে পারবো না। তার নাম তালিকায় এক নম্বরে থাকলেও আপনি ফোন দেননি কেন? এর জবাবে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আপনি গুলশান অফিসে যোগাযোগ করুন। আমি বাইরে আছি, এখন কিছু বলতে পারবো না।

জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বাংলানিউজকে বলেন, অন্তরা হুদা আমার সঙ্গে ২৮ নভেম্বর যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাকে আমি এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি।

ওই আসন থেকে ফরম কিনেও মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাৎকার দিতে যাননি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার প্রেস সেক্রেটারি তারেক হোসেন। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পুরো বিষয়টির পেছনে বড় ধরনের চক্রান্ত কাজ করেছে। আমি যতদূর জানি নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক আগেই জানতেন তিনি ওই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাবেন। তারপরও তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে একদিন আগেও পদত্যাগ না করে ২৮ নভেম্বর কেন পদত্যাগ করলেন। আসলে তিনি সালমা ইসলামের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তাকে ওয়াক ওভার দেওয়ার জন্যই এটা করে থাকতে পারেন।

আপনি কেন মনোনয়ন বোর্ডে গেলেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক বলেন, আমি স্যারের (নাজমুল হুদা) সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তার মেয়ে মনোনয়ন চেয়েছেন বলেই আমি যাইনি।

জানতে চাইলে খন্দকার আবু আশফাক বলেন, আমি ২৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আজকে দেখলাম পদত্যাগপত্র গৃহিত হয়নি বলে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে রিট করবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই আসনে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের অন্য কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। ফলে ধানের শীষে কেউ থাকছেন না ঢাকা-১ আসনে। আর আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনে নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগের টিকেট পেয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক ও শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৮
এমএইচ/জেডএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।