ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

উপজেলা ভোট: কর্মকর্তাদের সব ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
উপজেলা ভোট: কর্মকর্তাদের সব ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ সিইসি কে এম নূরুল হুদা (ফাইল ফটো)

ঢাকা: আসন্ন উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য কর্মকর্তাদের সব ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘গা-ছাড়া অবস্থায়, ঢিলাঢেলা অবস্থায়, হলো কি হলো না, এই মনোভাব নিয়ে দয়া করে নির্বাচন পরিচালনা করবেন না।

আপনাদের হাতে সম্পূর্ণ ক্ষমতা অর্পিত আছে। সেই ক্ষমতা বলে আপনারা অনেক কিছু করতে পারেন। আপনি আপনার উপজেলার নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারেন, একজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে দিতে পারেন। একজন যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন, আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। তাকে জরিমানা করতে পারেন। তাকে জেলে দিতে পারেন। আপনি আর কী চান? একটা নির্বাচন পরিচালনা করার প্রত্যেকটা ক্ষমতা আপনার হাতে আছে। সেই ক্ষমতা যদি প্রয়োগ করতে না পারেন, তাহলে ব্যর্থতা আপনাদের। যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে আপনাদের এ দায়িত্ব পালন করার কোনো অর্থ হয় না। আপনি অযোগ্য, অপদার্থ। আপনি বাদ দিয়ে চলে যান। আপনারা যদি সবাই বলেন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তাহলে সবাই এখান থেকে চলে যান। ’

তিনি বলেন, 'আমরা কি বলেছি কখনও, আপনারা নির্বাচন সুষ্ঠু করবেন না, কোনো একটা প্রার্থীকে জিতিয়ে দেবেন, কোনো একটা দলের দায়িত্ব নিতে হবে– এ কথা কেউ বলেছে? তাহলে কেন মাথা উঁচু করে দৃঢ়তার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবেন না? সুতরাং আমার কথা হলো পরিষ্কার, স্পষ্ট- যে নির্বাচন কমিশন আপনাকে/আপনাদেরকে একেকটা ব্যক্তিকে একেকটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়। আপনি যে উপজেলার দায়িত্ব নেবেন, সেই উপজেলায় আপনি একটা প্রতিষ্ঠান। আপনি একজন নির্বাচন কমিশন। আপনি একজন নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন একজন ব্যক্তি। যার দায়বদ্ধতা কেবল সংবিধানের ওপর। '

সিইসি বলেন, 'আপনি ব্যর্থ হলেন, আপনাকে শোকজ করা হলো, আপনি তার উত্তর দিলেন। তারপর তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। এই সমস্ত জিনিস, এই সমস্ত টালবাহানা নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোটেই হাতিয়ার নয়। আমরা এগুলো দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই, প্রত্যেককেই একজন দুর্ধর্ষ ব্যক্তি হিসেবে। ভয়ঙ্কর ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চাই। যেই হোক না কেন, আপনাকে দেখলে ভয় পাবে, আতঙ্কিত থাকবে। এখন যদি বলেন, বাপরে-বাপ এ তো খুব প্রভাবশালী, ক্ষমতাশালী তাকে তো কিছু করা যাবে না। তাহলে দয়া করে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সরে যান। নির্বাচনের সময় আচরণবিধি ভঙ্গ করলে একজনের রাজনৈতিক পরিচয় এই, দলীয় পরিচয় এই, সামাজিক পরিচয় এই, তাকে তো আমি কিছু করতে পারবো না। এরকম যদি আপনার মনে, আপনার চরিত্রে, ব্যবহারের দিকে কোথাও কিছু থেকে থাকে, তাহলে যাওয়ার সময় গোপনে বলে যাবেন সচিব সাহেবকে-আমি কিন্তু এ দায়িত্ব পালন করতে পারবো না। বাঘা বাঘা লোক রয়ে গেছে, তাদের আমার পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব না। '

নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ১০ মার্চ থেকে উপজেলা নির্বাচন শুরু হবে। এদিন ৮৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার পাঁচ ধাপে ৪৯২টি উপজেলার ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় ধাপে ১২৯ উপজেলায় ১৮ মার্চ ও তৃতীয় ধাপে ১২৭ উপজেলায় ২৪ মার্চ ভোটগ্রহণ করা হবে। আর চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় ভোট হবে ৩১ মার্চ। পঞ্চম ধাপের তফসিল এখনো ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
ইইউডি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।