ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিটি নির্বাচন

খোকনের কঠিন সময়, নির্ভার আতিক! 

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯
খোকনের কঠিন সময়, নির্ভার আতিক! 

ঢাকা: ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে পরিবর্তনের সম্ভাবনা বেশি ডিএসসিসি-এর মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে। 

ডিএসসিসি’র মেয়র প্রার্থী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তার মনোনয়ন কেনার মধ্য দিয়ে দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

 

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে ফরম বিক্রি শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।  

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত দলীয় ফরম বিক্রি ও জমার কার্যক্রম চলবে। এদিন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে দলের মেয়র প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম।  উত্তর সিটি করপোশেনের বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম নির্বাচিত হওয়ার পর মাত্র একবছরেরও কম সময় পেয়েছেন। উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে আতিকুল ইসলাম আতিক মেয়র নির্বাচিত হন।  

এ সময়ে তিনি সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনায় আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মনে করেন দলটির নীতি-নির্ধারকেরা। তাছাড়া এখন পর্যন্ত ডিএনসিসির মেয়র পদের জন্য এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কেউ দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেননি।  

সার্বিক বিবেচনায় তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে জানান ওই নেতারা। এক্ষেত্রে বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম অনেকটা নির্ভার বলেই জানিয়েছে দলের একাধিক সূত্র।  

তবে মেয়র পদের প্রার্থী পরিবর্তন আসার বেশি সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এ সময় গণমাধ্যমে আবেগ ঘন প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন তিনি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ সময় সাঈদ খোকন এও বলেন, ‘এখন রাজনীতিতে আমার কঠিন সময় যাচ্ছে। আমি সবসময় ঢাকাবাসীর পাশে ছিলাম। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যাতে কামিয়াব হই। ’
 
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) প্রথম সরাসরি ভোটে নির্বাচিত মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন গত ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।  

গত ৫ বছরের সিটি করপোরেশন পরিচালনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন, এমনকি নিজ দল আওয়ামী লীগের ভেতরেও।

এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির প্রথম দিনেই বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ফরম কিনেছেন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শেখ ফজলে নূর তাপস।  

ডিএসসিসিতে আরও মনোনয়ন কিনেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিম এবং আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু। তবে তাপসের দলীয় মনোনয়ন কেনা গুরুত্ব বহন করে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতা।  

তারা বলেন, ঢাকা দুই সিটির মধ্যে দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী নতুন আসার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিবারের সন্তানের মনোনয়ন কেনার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো বিষয় রয়েছে। তাপস নির্বাচন করতে চাইলে সেখানে অন্য কারো মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।  

তিনি আওয়ামী লীগৈর মনোনয়ন পেলে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তবে সব কিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোশনেই মেয়র প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পরিবর্তনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৯
এসকে/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।