ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দ্বিতীয়বার স্মার্টকার্ড পাওয়ার জটিলতা কাটছে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
দ্বিতীয়বার স্মার্টকার্ড পাওয়ার জটিলতা কাটছে

ঢাকা: অনেকেরই উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড হারিয়ে গেছে। কারো আবার ভুলভাবে মুদ্রিত হয়েছে।

ফলে প্রয়োজন নতুন আরেকটি স্মার্টকার্ডের। কিন্তু কার্ড বা অর্থ কোনোটাই না থাকার কারণে দিতে পারত না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু সহসাই খুলছে সে পথ।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্মার্টকার্ডের জন্য আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চলতি বছরেই। আর নতুন প্রকল্প আইডিইএ-২ চালু হচ্ছে জুনের মধ্যেই, যা সরকারি তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হচ্ছে। ফলে দ্বিতীয়বার যাদের স্মার্টকার্ড প্রয়োজন, তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভার কার্য বিবরণীতে বিষয়টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এতে এনআইডি প্রকল্প পরিচালককে জুনের মধ্যেই ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

ইতিমধ্যে আইডিইএ-২ প্রকল্পের লোকবল আউসোর্সিং করার জন্য টেন্ডারও দিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। যেখানে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, অফিস সহায়ক পদে কয়েক শ লোকবল নিয়োগ করার প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ভোটারদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সালের বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্পটি হাতে নেয় ইসি। সে সময়কার ৯ কোটি ভোটারদের হাতে উন্নতমানের এই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ফরাসি কোম্পানি অবারথার টেকনোলজিসকে কাজ দেয় ইসি। তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কার্ড বুঝিয়ে দিতে না পারায় নির্বাচন কমিশন বর্তমানে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে কাজটি করে নিচ্ছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, অবারথার ৭ কোটি ৭৩ লাখ কার্ড সরবরাহ করতে পেরেছিল। সেই মোতাবেক পূর্বের ১ কোটি ২৭ লাখ নাগরিকের কার্ড ঘাটতি ছিল। এই ক'বছরে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি। সব মিলিয়ে আরো প্রায় তিন কোটির মতো কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকের তথ্য ইনপুট করে বিতরণে যেতে হবে। আর এজন্য আইডিইএ-২ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আর এই প্রকল্পের ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা অনুমোদনও দিয়েছে সরকার। ফলে কেবল নতুন ভোটারই নয়, যাদের দ্বিতীয়বার স্মার্টকার্ড প্রয়োজন, তারাও পাবেন। তবে দ্বিতীয় প্রকল্প পুরোদমে শুরু না হওয়া পর্যন্ত যাদের প্রয়োজন তাদের দ্বিতীয়বার স্মার্টকার্ড না দিয়ে লেমিনেটিং করা এনআইডি সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

এ বিষয়ে আইডিইএ প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল কাদের জানিয়েছেন, অবারথারের কাছ থেকে ৯ কোটি কার্ড পাওয়ার কথা থাকলেও আমরা ৭ কোটির কিছু বেশি কার্ড পেয়েছিলাম। আরও দুই কোটি কার্ড আমাদের হাতে নেই। ২০২৫ সালের মধ্যে নিবন্ধিত সকল নাগরিককে স্মার্ট কার্ড প্রদান করার জন্য আমরা সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।

আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প অনুমোদনের পর গত ১১ ফেব্রুয়ারি সরকারি আদেশ জারি হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

জানা গেছে, বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১১ কোটি ১৭ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য আছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আরো প্রায় চার কোটির মতো ভোটার যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ভোটারদেরও স্মার্টকার্ড দেবে ইসি। সেই হিসেবে এ সময়ের মধ্যে আরো প্রায় ১০ কোটির মতো স্মার্টকার্ড তৈরি ও বিতরণ করতে হবে।

আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প শেষ হলে সরকারের কাছে এটি রাজস্ব খাতে নেওয়ার জন্যও প্রস্তাব রয়েছে ইসির।

করোনার কারণে স্মার্টকার্ড উৎপাদন ও বিতরণ বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
ইইউডি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।