ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন

এক ঝলকে দেখে নিন কেসিসির ভোট

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
এক ঝলকে দেখে নিন কেসিসির ভোট

খুলনা: ভৈরব-রূপসা-পাড়ের খুলনায় ভোট উৎসব সোমবার (১২ জুন)। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে।

১৯৮৪ সালের ১০ ডিসেম্বর সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর এটি হবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ৬ষ্ঠ নির্বাচন। দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতায় কোনো কমতি রাখেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এবারের নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা),  ইসলামী আন্দোলন, জাকের পার্টি অংশ নিচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ নির্বাচনকে ঘিরে সব মহলের নজর এখন খুলনার দিকে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে পরাজিত করে মেয়র হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের খালেক এবারও দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে লড়বেন। তার বিপরীতে নেই শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী।

প্রার্থীর সংখ্যা: কেসিসি নির্বাচনের মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), জাপার শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা), জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্র এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক (দেয়াল ঘড়ি)।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। এছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে ১০টি। এর মধ্যে ১৩ ও ২৪নং সাধারণ ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই জন কাউন্সিল নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ২৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে শুধু কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৫ জন।

ভোটার সংখ্যা: এবারের নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডের মোট  ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। এবারই প্রথম সবকটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে।

গণনা শেষে ফল ঘোষণা হবে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ইসির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে।

* নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আলাউদ্দীন ।
* ৪৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
* ভোট কেন্দ্র: ২৮৯টি; ভোটকক্ষ ১৭৩২টি।

নিরাপত্তা: কেসিসি নির্বাচনে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৪ হাজার ৮২০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে নিয়মিত পুলিশ ৪ হাজার ৫২০ জন। আর ৩ শ আর্মস পুরিশ ব্যাটেলিয়ন। সেই সঙ্গে ৩ হাজার ৪৬৮ জন আনসার সদস্যও মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ১৬ প্লাটুন বিজিবি, ২ কোম্পানি র‌্যাব নির্বাচনের কাজে সহযোগিতা করবে। পাশপাশি ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।  

প্রতি কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ১৭ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। ৭১টি মোবাইল টিম কাজ করবে। প্রতি ৩ কেন্দ্রের জন্য একটি করে মোট ২০টি মোটরসাইকেল টিম থাকবে। তার মধ্যে ২টি মোটরসাইকেলে ৪ জন করে বিভিন্ন এলাকায় ক্রস পেট্রোল ডিউটি করবে। আর স্ট্যান্ডবাই পার্টি থাকবে ২০টি। রিজার্ভ ফোর্স থাকবে ৫টি দলে বিভক্ত হয়ে। প্রতি টিমে থাকবে ৫৫ জন করে। এর মধ্যে ৩৫ জন পুলিশ ও ২০ জন ব্যাটালিয়ন সদস্য।

কেসিসির শেষ ভোট: কেসিসির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ মে। সেই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচন হয়েছিল দলীয় প্রতীকে। তখন মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে প্রায় ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন। কেসিসির মোট ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ঘোষিত ২৮৬টি কেন্দ্রের (তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত ছিল) ফলাফলে নৌকা প্রতীকের তালুকদার আবদুল খালেক পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট। আর ধানের শীষ প্রতীকের নজরুল ইসলাম মঞ্জু পেয়েছিলেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট। মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন।

মেয়র পদে আরও তিন প্রার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে হাতপাখা প্রতীকের ইসলামী আন্দোলনের মুজ্জাম্মিল হক ভোট পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৩৬৩টি; জাতীয় পার্টির (জাপা) এস এম শফিকুর রহমান (লাঙ্গল), পেয়েছিলেন ১০৭২ ভোট এবং কাস্তে প্রতীকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মিজানুর রহমান, পেয়েছিলেন ৫৩৪টি ভোট। তারা তিন জনই জামানত হারিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।