ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

বেতাগীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-স্বতন্ত্র পিছিয়ে নেই কেউ

সুমন সিকদার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
বেতাগীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-স্বতন্ত্র পিছিয়ে নেই কেউ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরগুনা: ঘরির কাটায় রাত সোয়া নয়টা। প্রচার প্রচারণার মাইকগুলো বন্ধ হয়ে গেলেও বন্ধ হয়নি নির্বাচনী আলাপচারিতা।

বরগুনার বেতাগী পৌরসভা বাসস্ট্যান্ডে একটি চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায় লোক সমাগম।

বেতাগী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের ভালো মন্দ দিক নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত সবাই।

ভোটাররা চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন তিন প্রার্থীকে নিয়ে। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত এবিএম গোলাম কবির (প্রতীক-নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. হুমায়ন কবির মল্লিক (প্রতীক-ধানের শীষ) ও জাতীয় পার্টির সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (প্রতীক-জগ) নাসির উদ্দিন পিযুস।

এছাড়া আলোচনায় না থাকলেও প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) জাহাঙ্গীর আলম লাভলু, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) (প্রতীক-কম্পিউটার) আবদুল ওয়াজেদ হাওলাদার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাহবুবুর রহমান (নারিকেল গাছ প্রতীক)। সবারই ধারণা এবার লড়াই হবে ত্রিমুখি।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেতাগী পৌরসভায় এবার মেয়র পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবিএম গোলাম কবির জনপ্রিয়তার দিক থেকে ভালো অবস্থানে না থাকলেও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর কাছে ভরাডুবি হলেও পৌর নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি।

অন্যদিকে, বিএনপি থেকে লড়ছেন পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হুমায়ন কবির মল্লিক। রাজনৈতিক জীবন অতটা শক্তিশালী না হলেও বিএনপির একচেটিয়া কিছু ভোট পাবেন তিনি। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ফলাফল তার দিকে ঘুরে যেতে পারে। তবে এখনো দলের মধ্যে রয়েছে কোন্দল যা কাটিয়ে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে।

এছাড়া ভালো অবস্থানে আছেন জাতীয় পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পিযুস। তবে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করছেন না। বরং জাতীয় পর্টির সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হতে চান। গত পৌর নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও ব্যক্তি ইমেজের কারণে এবার বদলে যেতে পারে হিসেব-নিকেষ।

বেতাগী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বারেক হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, তিন প্রার্থীই সমানে সমান। কারো ব্যক্তি ইমেজ ভালো তো, কারো দলীয় ইমেজ। কে বিজয়ী হবেন তা বলা মুশকিল। তবে যে-ই বিজয়ী হোক না কেন ভোটের ব্যবধান খুব বেশি হবে না। সব মিলিয়ে এখানে উৎসব মুখর পরিবেশে চলছে প্রচার-প্রচারণা। এখন অপেক্ষা ৩০ তারিখের।

তার কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. স্বপন বলেন, লড়াই হবে সামানে সমান। তবে যে প্রার্থী মানুষের হৃদয়ের মধ্যে ঢুকতে পারবে সে-ই জয়ী হবে। এখানে যে তিনজন প্রার্থী আলোচনায় আছেন তাদের কারো থেকে কেউ কম না।

চায়ের দোকানের এ আড্ডায় যোগ দেন ইতালি প্রবাসী রিয়াজ হোসেন। বেতাগীর এই সন্তান ইতালির বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যেসব প্রার্থী এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীও কোনো অংশে কম নন। তবে জনগণের ভোটের রায়ে কার ভাগ্য খুলে যাবে তা বলা মুশকিল। ভোটাররা যোগ্য প্রার্থী বাছাই করেই ভোট দেবেন যার মাধ্যমে পৌরবাসীর ভাগ্যের উন্নয়ন হবে।

১০ দশমিক ১৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বেতাগী পৌরসভা গঠিত হয় ১৮ মার্চ ১৯৯৯ সালে। এখানে ১৫ হাজার ৬৩৪ মানুষের বাস। ভোটার সংখ্যা সাত হাজার ৮৮৩।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে বেতাগী পৌরবাসীর অভিবাবক কে হন এখন তাই দেখার বিষয়। তবে যে-ই মেয়র নির্বাচিত হন না কেন, পৌরবাসীকে সঠিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেবেন বলে প্রত্যাশা সবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।