ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

নরসিংদী থেকে সেরাজুল ইসলাম, মহিউদ্দিন মাহমুদ

‘শেষ পর্যন্ত দেখতাম চাই’

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ ও মহিউদ্দিন মাহমুদ দিন মাহমুদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
‘শেষ পর্যন্ত দেখতাম চাই’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নরসিংদী থেকে: নরসিংদীর তিন পৌরসভার মধ্যে নরসিংদী ও মাধবদী পৌরসভায় ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। গোলমালের কারণে মাধবদীর চারটি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।



তবে মনোহরদীতে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের খবর পাওয়া গেছে। দুপুর পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন সহকারী রির্টানিং অফিসার আলতাফ হোসেন।

দুপুর পর্যন্ত মাধবদী পৌরসভার চারটি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ফজলুল করিম মাস্টার কিন্ডারগার্টেন স্কুল ভোটকেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও জালভোট প্রদানের অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেছেন রির্টানিং অফিসার রফিকুল ইসলাম। ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রির্টানিং অফিসার।

মাধবদী মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় সন্ত্রাসীরা। সকাল সাড়ে দশটায় প্রথম ককটেল বিস্ফোরণের পর পরই ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

এছাড়া দুপুরে নুর আলম ভূঁইয়া কিন্ডারগার্টেন ও কোতোয়ালিরচর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে আনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি নেতা আবু তাহের।
 

নরসিংদী পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সোহেলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট সুলতান উদ্দিন মোল্লা বাংলানিউজকে অভিযোগ করেছেন, সকাল দশটার দিকে আওয়ামী লীগের লোকজন ব্রাহ্মণদী কেকেএম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বানিয়াছল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউএমসি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও শফিকুল ইসলাম হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে জোর করে প্রবেশ করে জালভোট দিয়েছেন।
 
বিএনপির পোলিং এজেন্টরা বাধা দিলে তাদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন সুলতান উদ্দিন মোল্লা।
 
তার অভিযোগ বলেন, এ ভোট ‘জালিয়াতিতে’ পুলিশ, আনসার সবাই সহযোগিতা করছে। তাদেরকে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
 
রির্টানিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুরাইয়া বেগমকে অভিযোগ দিলে তিনিও কোনো সহায়তা করেননি বলেও দাবি করেন সুলতান উদ্দিন মোল্লা।
 
তিনি বলেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত দেখতাম চাই। আমরা কতাটুকু করতে কি করতে পারি’। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অনেকবার ফোন দেওয়া হলেও রির্টানিং অফিসার সুরাইয়া বেগম রিসিভ করেননি।
 
নরসিংদী পৌরসভার আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরুজ্জামানের ভাবী ও প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের সহধর্মিনী আওয়ামী লীগ নেত্রী তামান্না নুশরাত বুবলি দাবি করেছেন, বিএনপির লোকজন ভুয়া অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
 
সব কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন বলেও দাবি করেন বুবলি।

নরসিংদীতে মেয়র পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. কারুজ্জামান, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বাইসাইকেল প্রতীকে জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী ছাদেকুর রহমান, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপল্‌স পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী ফারজানা আক্তার এবং মোবাইল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়্যুম।
 
মাধবদী পৌরসভার ১২টি সাধারণ ওর্য়াডে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৭০৬ জন। তাদের মধ্যে ১৪ হাজার ৮৭১ জন পুরুষ ও ১২ হাজার ৮৩৫ জন নারী ভোটার রয়েছেন। এখানে ভোটকেন্দ্র ১২টি।
 
এখানে মেয়র প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ইলিয়াস, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশাররফ হোসেন মানিক এবং হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হারুনুর রশিদ।
 
মনোহরদী পৌরসভার ৯টি সাধারণ ওর্য়াডে মোট ভোটার ১২ হাজার ৭০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৭৯৮ জন ও নারী ভোটার ৬ হাজার ২৭২ জন। এখানে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯টি।
 
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আমিনুর রশিদ সুজন, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মাহমুদুল হক, লাঙল প্রতীকে জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র হিসেবে জামায়াতের অধ্যাপক আমজাদ হোসেন এবং জগ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল খালেক এ পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
এসআই/এমইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।