রাজশাহী: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের হাটগাঙ্গোপাড়ায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষ এবং পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (০8 মে) বিকেলে হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মাসউদ আলী সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ৬০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ১ হাজার ২০০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
তবে এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এরইমধ্যে গ্রেফতার আতঙ্কে ওই এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে জানান, দায়েরকৃত মামলায় পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সিদ্দিকুর রহমানকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে জানান ওসি।
এদিকে, শনিবার বিকেলে সংঘর্ষের পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও ৠাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ গা ঢাকা দিয়েছেন। এতে পুরো গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। তবে আহতরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর মধ্যে বাগমারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আবদুর রাজ্জাকসহ আট পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
অন্যরা হলেন- বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজিব হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলাম, কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, আফজাল হোসেন, শহীদুল ইসলাম ও মাসুদুর রহমান। এছাড়া থানার ওসি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
এর আগে শনিবার (০৭ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের হাটগাঙ্গোপাড়া গ্রামে স্থগিত হওয়া ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এতে দু’জন নিহত ও অর্ধশত আহত হন।
নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ। তিনি হলেন আউচপাড়া ইউনিয়নের সারন্দি গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান (৩০)। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি (৪০) নিহতের খবর পাওয়া গেলেও শেষ পর্যন্ত তার পরিচয় মেলেনি। রোববার বিকেল পর্যন্ত তার মরদেহের সন্ধান পায়নি পুলিশ।
আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার জান মোহাম্মদ ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী শহিদুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে ও পরে গুলি চালায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৬
এসএস/আরআইইউ/জেডএস