ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

ঘোড়ায় চড়ে নৌকা ডোবাতে মরিয়া আ.লীগের দুই সভাপতি 

কেরানীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২১
ঘোড়ায় চড়ে নৌকা ডোবাতে মরিয়া আ.লীগের দুই সভাপতি  জেড এ জিন্নাহ ও মো. আলাউদ্দিন।

কেরানীগঞ্জ: দুজনই আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কান্ডারি ও পরীক্ষিত সৈনিক। দল করতে গিয়ে সহ্য করেছেন জেল-জুলুম।

ছাত্রলীগ-যুবলীগ করে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।  

কিছুদিন আগেও ছিলেন নৌকার মাঝি হওয়ার দৌড়ে।  দলীয় প্রতীক (নৌকা) নিয়ে করতে চেয়েছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, তবে সে ভাগ্য হয়নি দুজনের কারোরই। গত দুইবারের চেয়ারম্যান হযরতপুর থেকে আয়নাল হক আয়নাল ও বাস্তা ইউনিয়ন থেকে আশকর আলীকেই করা হয় নৌকার মাঝি।  

তাই নৌকার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তুমুল আলোচনায় থাকা হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন ও বাস্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জেড এ জিন্নাহ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও দলের আনুগত্য স্বীকারসহ নানা কারণে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন অনেকেই।  

তবে কেন্দ্রের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেনি বাস্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুইবারের সভাপতি জেড এ জিন্নাহ ও হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি মো. আলাউদ্দিন। হেভিওয়েট দুই প্রার্থীই ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। যেকোনো মূল্যে ডোবাতে চান নৌকা। তবে সেটা বঙ্গবন্ধু কিংবা শেখ হাসিনার নৌকা নয়, দুর্নীতিবাজ ও হাইব্রিডদের নৌকা।

বাস্তা ইউনিয়নে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী নেতা জিন্নাহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়িত রেখেছি। ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছি, দলের দুঃসময়েও দলকে ছেড়ে যাইনি, জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করে বেঁচে আছি অথচ আমরা নৌকা প্রতীক পাই না, নৌকা প্রতীক পায় হাইব্রিড ও প্রধানমন্ত্রীর নাম ফলক ভাঙার আসামি। তাই দলের ত্যাগী নেতা, কর্মী, সমর্থক ও জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে ঘোড়া প্রতীকেই নির্বাচন করছি।

হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আলাউদ্দিন বলেন, জনসাধারণের চাওয়ায়ই ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচন করা। বঙ্গবন্ধু ও তার মেয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনার আদর্শেই দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ করে আসছি। নৌকা প্রতীকেই নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাইনি তাই সর্বসাধারণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের চাওয়ায় আমি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আছি এবং থাকবো। আশাকরি বিজয়ী হয়ে হযরতপুর ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি শেখ হাসিনার সোনার বাংলা গড়ার অংশ হবো।  

এ ব্যাপারে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাস্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জেড এ জিন্নাহকে দলের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ।  

অন্যদিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন বিপ্লব জানান, হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন দলের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করছে, এতে আমাদের কোনো সমর্থন নেই। বারবার নিষেধ করার পরও তাকে নির্বাচন থেকে সরানো যায়নি। দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করায় দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নৌকার বিপক্ষে গিয়ে আওয়ামী লীগ করার সুযোগ নেই।

আগামী ২৮ নভেম্বর কেরানীগঞ্জের ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সর্বমোট ৬১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা কর‌বেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ। ১০৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯৪টি ওয়ার্ডে ৪৭৩ জন প্রার্থী মেম্বার পদে, ১৫ জন চেয়ারম্যান পদে ও সংরক্ষিত আসনে ১২৪ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২১
আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।