ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

মনোনয়ন ফরম কিনতে গিয়ে জানলেন তারা অন্য ওয়ার্ডের ভোটার

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
মনোনয়ন ফরম কিনতে গিয়ে জানলেন তারা অন্য ওয়ার্ডের ভোটার সম্ভাব্য দুই প্রার্থী

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম কিনতে গিয়ে জানলেন তারা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার নন। হতভম্ব হয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবরে আবেদন করেছেন সম্ভাব্য দুই প্রার্থী।

 

ভোটারহীন সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম বিছনদই গ্রামের মৃত আনা উল্লাহর ছেলে আশরাফ আলী যার ভোটার ক্রমিক নং ৬৮ ও একই ওয়ার্ডের ছোলেমান গনির ছেলে আলতাব হোসেন যার ভোটার ক্রমিক নং ১০৭। তারা জন্ম সূত্রে ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা ও ভোটার।

অভিযোগে জানা গেছে, আগামী ২৩ ডিসেম্বর হাতীবান্ধা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটকে কেন্দ্র করে প্রায় এক বছর আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মাঠে গণসংযোগ শুরু করেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তফসিল ঘোষণার পর থেকে সংশ্লিষ্ট রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু করেছেন তারা।

উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান পশ্চিম বিছনদই গ্রামের আশরাফ আলী ও আলতাব হোসেন। সেখানে মনোনয়ন ফরম কেনার পরে জানতে পারেন তারা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটারই নন। তাদের ভোট অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। যা তারা নিজেরাই জানেন না। তারা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন। তাই কেউ তাদের আড়ালে গোপনে ভোট স্থানান্তর করেছেন বলে তাদের দাবি।  

এদের মধ্যে আশরাফ আলীকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এবং আলতাব হোসেনকে ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ২ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার না হওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্রও প্রাথমিকভাবে বৈধতা পাচ্ছে না। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই এর প্রতিকার ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে দুই সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবরে পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করেন।  

আশরাফ আলী বলেন, কয়েক বছর ধরে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করছি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই কে বা কারা আমার ভোট স্থানান্তর করে দেয়। যার কারণে গত দুইবার প্রস্তুতি নিয়েও নির্বাচনে অংশ নিতে পারিনি। এটার দ্রুত প্রতিকার দাবি করছি।  

অপর সম্ভাব্য সদস্য পদপ্রার্থী আলতাব হোসেন বলেন, ভোটার হওয়ার পর থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আসছি। গত সংসদ নির্বাচনেও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হিসেবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছি। এবার সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে এক বছর ধরে গণসংযোগ করে আসছি। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জানতে পারি আমার ভোট ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ২ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানান্তর করা হয়েছে। যা আমি নিজেও জানি না। ভোটার স্থানান্তর করতে কখনই আবেদন করিনি। নির্বাচনে যাতে প্রার্থী হতে না পারি তাই হয়তো নির্বাচন অফিসকে ম্যানেজ করে আমার প্রতিপক্ষরা এমনটি করেছেন। দ্রুত এর প্রতিকার দাবি করছি।  

ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার জানা মতে তারা দুজনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ভোটার। হয়তো কেউ আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রত্যায়ন দিয়ে আশরাফ ও আলতাবসহ একাধীক ব্যক্তির ভোট নিজ ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেছে।  

তিনিও দ্রুত তদন্ত করে প্রতিকার দাবি করেন।  

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস্যদের প্রত্যায়ন ছাড়া ভোটার স্থানান্তর হয় না। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ভোটার স্থানান্তর বিষয়ে দুইটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।