ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

ঈদের বর্ণাঢ্য ‘ইত্যাদি’তে যা থাকছে

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৪
ঈদের বর্ণাঢ্য ‘ইত্যাদি’তে যা থাকছে

প্রতি বছরের মত এবারও ঈদ আনন্দের সঙ্গে দর্শকদের জন্য বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসছে হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’। ঈদ এলেই সব বয়সের, সব শ্রেণী-পেশার মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন তাদের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদি দেখার জন্য।

এবারও ঈদের ইত্যাদি ধারণ করা হয়েছে মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ স্থান জুড়ে নির্মিত নান্দনিক সেটে ধারণ করা হয় এবারের ইত্যাদি।

বরাবরের মত এবারও ইত্যাদি শুরু করা হয়েছে- ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ এই গানটি দিয়ে। ইত্যাদি গত তিন দশক ধরেই হাজার হাজার মানুষ নিয়ে ঢাকায় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে এই গানটি পরিবেশন করে আসছে। এক সময় এই গানটি অবহেলিত থাকলেও এখন ঈদের সময় সব চ্যানেলেই এই গানটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়। নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতায় এবারে এই গানটি পরিবেশন করবেন প্রখ্যাত নজরুল সংগীত শিল্পীদের সঙ্গে এই প্রজন্মের প্রায় ৩৫ জন নজরুল সংগীত শিল্পী।  

এছাড়াও নৃত্যে-ছন্দে-আনন্দে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী একই রকম পোশাক ও রংবেরংয়ের উপকরণ নিয়ে এই গানের চিত্রায়ণে অংশ নিয়েছে। সবার সম্মিলিত বর্ণিল পরিবেশনা ও স্টেডিয়ামের হাজার হাজার দর্শকের অংশগ্রহণে পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে এক উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিলো। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি।

ঈদের ইত্যাদির গানগুলোর কথায়, সুরে ও চিত্রায়ণে যেমন ব্যতিক্রমী, শিল্পী নির্বাচনেও থাকে বৈচিত্র্য। এবারের ঈদের ইত্যাদিতে গাইবেন এই প্রজন্মের ক’জন জনপ্রিয় শিল্পী। ‘জীবনের সব সুখ’ শিরোনামে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল।

‘রঙে রঙে রঙিন হব’ শিরোনামে আর একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এ সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাহসান খান এবং অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। পেশাদার সংগীতশিল্পী না হয়েও পেশাদার সংগীতশিল্পী তাহসানের সঙ্গে খুব চমৎকারভাবেই গানটি গেয়েছেন ফারিণ। উল্লেখ্য, অভিনয়ে জনপ্রিয় ফারিণের টিভিতে প্রচারিত এটিই প্রথম গান। তাই বলা যায় ইত্যাদির মাধ্যমেই ফারিণের সংগীত শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটলো।

বাপ্পা মজুমদার ও ইমরান মাহমুদুলের গানটির কথা লিখেছেন লিটন অধিকারী রিন্টু, তাহসান ও ফারিণের গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল। দুটি গানেরই সুর ও সংগীত করেছেন ইমরান মাহমুদুল।

এবারের ঈদের বিশেষ ইত্যাদিতে ফোক ও আধুনিক এই দুই ধারার সমন্বয়ে তৈরি একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন প্রয়াত সংগীতশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর দুই সন্তান প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসান। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল, সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন প্রীতম হাসান। গানটিতে এই দুই ভাইয়ের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন ৮জন তরুণ বিট বক্সার।

ইত্যাদিই একমাত্র অনুষ্ঠান যেখানে নাচের প্রচলিত ধারার বাইরে বিষয় ভিত্তিক নাচ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের বিষয় সেকাল আর একালের বিয়ে। নাচটি পরিবেশন করেন দেশের খ্যাতিমান নৃত্যজুটি শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নিপা। তাদের সঙ্গে ছিলেন দেড় শতাধিক নৃত্য ও অভিনয় শিল্পী। হানিফ সংকেতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নাচটির সংগীত পরিচালনা করেছেন তরুণ সংগীত পরিচালক আকাশ মাহমুদ।

এবারের ইত্যাদির ঈদ পর্বে দুটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে দুটি বক্তব্যধর্মী মিউজিক্যাল ড্রামা দেখা যাবে। একটিতে চারজন অভিভাবকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী শহীদুজ্জামান সেলিম, আজিজুল হাকিম, সাবেরী আলম এবং আল মামুন। আর একটি মিউজিক্যাল ড্রামায় স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ইন্তেখাব দিনার ও সারিকা সাবরিন।  

ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালা শিরোনামে একটি মজাদার নাটিকায় অংশ নিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক মীর সাব্বির এবং এই সময়ে ওটিটি ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান। এই দুই অভিনেতার মনোজ্ঞ ও রসালো অভিনয়ে ফুটে উঠেছে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার বিভিন্ন সমস্যা।

তথাকথিত ভাইরাল সেলিব্রেটিদের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে ইত্যাদির মঞ্চে দর্শকদের সামনে নির্মিত একটি নাটিকায় অভিনয় করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক’জন নাট্যপ্রেমী শিক্ষার্থী, আর এই পর্বটি পরিচালনা করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ।

মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপসের ব্যবহার নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এবারের দলীয় সঙ্গীত। এই পর্বে অংশগ্রহণ করেছেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ও মডেল সিয়াম আহমেদ এবং টিভি পর্দার জনপ্রিয় মুখ মেহজাবীন চৌধুরী। তাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন ইত্যাদির নিয়মিত নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি। কণ্ঠ দিয়েছেন পুলক অধিকারী ও নোশিন তাবাসসুম স্মরণ। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ ও মামুন।

শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে অনুষ্ঠান ধারণই নয়-প্রায় দুই যুগ ধরে ইত্যাদিতে বিদেশি নাগরিকদের দিয়েও আমাদের লোকজ সংস্কৃতি, বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নিয়মিতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এর ফলে বিদেশিদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের সংস্কৃতি। নাচ-গান ও গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তুখোড় অভিনয় সমৃদ্ধ এবারের পর্বের বিষয় কী? ঈদের পরদিন ইত্যাদির প্রচারের সময়ই জানা যাবে।
প্রতিবারই ইত্যাদির দর্শক নির্বাচন প্রক্রিয়া থাকে ভিন্ন রকম। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্যতিক্রমী উপকরণের মাধ্যমে নির্বাচিত ৩ জন দর্শকের মুখোমুখি হয়েছেন বরেণ্য অভিনেতা আবুল হায়াত।

এবার ঈদেও রয়েছে নাতি আর নানি, শোনা যাবে নাতির ভুল ধরার বাণী। এছাড়াও রয়েছে ঈদকে ঘিরে ডজনখানেক বিদ্রুপাত্বক রসালো নাট্যাংশ। দান-অনুদানে অনিয়ম, সংগীতের সেকাল-একাল-ক্রান্তিকাল, ঘুষ-অন্যায় নাকি অন্য আয়?, অপাত্র-সুপাত্র এবং বিয়ের ভালো-মন্দ ও ভূত-ভবিষ্যৎ, কাপড়ে মাপের ফাঁপরে পড়ে, প্রেমিক-প্রেমিকা নাকি স্বামী-স্ত্রী কারা সুখি?, জীবনের গল্প নিয়ে নাটকে আটক নায়কসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরো কয়েকটি নাট্যাংশ রয়েছে।

ইত্যাদির নিয়মিত অভিনয় শিল্পীদের পাশাপাশি এসব পর্বে অভিনয় করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অভিনয় শিল্পীরা। ইত্যাদির শিল্প নিদের্শনা করেছেন যথারীতি মুকিমূল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন রানা সরকার ও মামুন মোহাম্মদ।

ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ঈদের বিশেষ ইত্যাদি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচার হবে ঈদের পরদিন রাত ০৮টার বাংলা সংবাদের পর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৪
এনএটি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।