বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে নির্মিত ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ‘যাত্রা উৎসব ২০২৪’-এর। নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ৭ দিনব্যাপী আয়োজিত উৎসবের সমাপনী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে সন্ধ্যা ৬ টায়।
এদিন গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় যাত্রাপালা ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ দেখতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চে ভিড় জমান হাজারো দর্শক।
আয়োজনের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি গাজী বেলায়েত। সভাপতির বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন, যাত্রার নীতিমালা আছে, যে নীতিমালার আলোকে আমরা চাই সারা বাংলাদেশে যাত্রা হোক। আমাদের শিল্পকর্ম, আমাদের কবিতা চর্চা, আমাদের গান, নাটক প্রেরণা যোগায় আমাদের জীবনে, আমাদের সামাজিক জীবনে। সেজন্য আমরা চাই যে, যাত্রা, গান এবং এরকম সকল অনুষ্ঠান যেন বাংলাদেশের সমাজ জীবনের কেন্দ্রে থাকে, আমাদের প্রেরণা যোগাতে পারে।
যাত্রা মঞ্চায়নের ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, আমরা যখন খুঁজছি নতুন বাংলাদেশ কেমন হবে ঠিক তখন আমরা চাই যে, আমাদের দেশে অজস্র গান আছে, নাট্যানুষ্ঠান আছে সেগুলো যেন সব জায়গায় অনুষ্ঠিত হতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এরপর ৭ দিনব্যাপী যাত্রা উৎসবে যাত্রা পরিবেশনকারী দলগুলোর সত্ত্বাধিকারীদের হাতে পোস্টার স্মারক তুলে দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব শেষে শুরু হয় ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’। পরিবেশনায় ছিল যাত্রাদল ‘যাত্রাবন্ধু অপেরা’। যাত্রা পালার নির্দেশনা দিয়েছেন আবুল হাশেম এবং পালাকার ছিলেন শ্রী শচীননাথ সেন।
অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রাণচাঞ্চল্যতা ও গতিশীলতা ফেরাতে নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যে গেল ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ যাত্রা উৎসবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিবন্ধিত সাতটি যাত্রা দল যাত্রা পরিবেশন করে।
প্রায় হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ ঐতিহ্যের এ শিল্পকে চর্চার মাধ্যমে টিকিয়ে রাখা এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্পীদের পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে পেশাদারিত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যেই এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। ৭ দিনব্যাপী এ উৎসবের সকল ব্যয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৪
এনএটি