ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

রাজ্জাকের সঙ্গে কিছুক্ষণ

হিন্দি ছবি কেনো এভাবে মুক্তি দেওয়া হবে?

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৫
হিন্দি ছবি কেনো এভাবে মুক্তি দেওয়া হবে? রাজ্জাক

দেশীয় চলচ্চিত্রের স্বর্ণালি যুগে যতো ভালো ছবি হয়েছে, তার প্রায় সবই ছিল রাজ্জাককেন্দ্রিক। ষাটের দশক থেকে শুরু করে আজও কাজ করছেন তিনি।

তার নাম মনে হলে শিল্পীদের শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে। কিংবদন্তি এই শিল্পী অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন চার দশকেরও বেশি সময়। তিনি একাধারে অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় তার জন্ম। এই দিনে গুণী মানুষটির ৭৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে। গত সপ্তাহে সপরিবারে কলকাতায় ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। ঢাকায় ফেরার পর তার সঙ্গে কথা হলো কিছুক্ষণ।

বাংলানিউজ : কলকাতায় কেমন ঘুরলেন?
রাজ্জাক : কলকাতায় সবার সঙ্গে ভালো সময় কেটেছে। গত সপ্তাহে স্ত্রী, পুত্র সম্রাট ও পুত্রবধূকে নিয়ে কলকাতা বেড়াতে গিয়েছিলাম। টালিগঞ্জে আমার বেড়ে ওঠা। ওদিকে হেঁটে গেলেও আমার ভালো লাগে। আর সেখানে অ্যামিউজমেন্ট পার্কেও আমরা ঘুরে বেড়িয়েছি। কলকাতা থেকে ফিরেছি গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে।

বাংলানিউজ : ২৩ জানুয়ারি তো আপনার বিশেষ একটি দিন...
রাজ্জাক : হ্যাঁ। সব মিলিয়ে আল্লাহর রহমতে এই মুহূর্তে শারীরিকভাবে বেশ ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। । তবে ভারত থেকে ফেরার পর ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছি। একটু ‍আগে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। সবাই দোয়া করবেন যেন সবসময় সুস্থ থাকতে পারি, ভালো থাকতে পারি।

বাংলানিউজ : জন্মদিনে কারও কথা আলাদাভাবে মনে পড়ে?
রাজ্জাক : বাবা-মা, ভাইবোনদের কথা খুব মনে পড়ে। শৈশবের জন্মদিনগুলোও চোখে ভাসে। আগে জন্মদিন এলে আগে এক রকম আবহ তৈরি হতো। এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পাল্টেছে। আগে আমার বাসায় দিনভর উৎসব হতো, এখন আর সেসব করতে পারি না। কারণ সেই প্রস্তুতি নিতে অনেক ধকল সইতে হয়।

বাংলানিউজ : জন্মদিনটি কীভাবে কাটাবেন?
রাজ্জাক : জন্মদিনে তেমন কিছু করছি না। ‍বাসাতেই থাকবো। আর কাছের মানুষরা তো আসে অনেকেই। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বের হওয়ার ইচ্ছা নেই।

বাংলানিউজ : আজ নতুন কোনো পরিকল্পনা কথা জানাবেন?
রাজ্জাক : পরিকল্পনা করে কিছু হয়নি আমার। চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি। চলচ্চিত্র নিয়েই থাকতে চাই। চলচ্চিত্র ছাড়া অন্য কিছুতে মন বসে না। ৭৩ বছর বয়সে এসেও সুস্থ-স্বাভাবিক আছি, এতেই আমি খুশি।

বাংলানিউজ : এখন আপনার সময় কীভাবে কাটে?
রাজ্জাক : যেহেতু এখন একদমই কাজ করছি না, তাই নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটে। ওরা একেকজন গল্প বলে, আমি শুনি। ওরা খেলে, আমি দেখি। ওদের আবদার মেটানোর চেষ্টা করি।

বাংলানিউজ : টিভিতে কি বেশি দেখেন?
রাজ্জাক : সবসময় টিভি দেখি না। যতক্ষণ টিভির সামনে থাকি সংবাদ আর পুরনো ছবিগুলো দেখি।

বাংলানিউজ :  রূপকথার গল্পের মতোই এগিয়েছে আপনার জীবন। জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ না হলে কি আমরা রাজ্জাককে পেতাম?
রাজ্জাক : হয়তো না! নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে আমার যাত্রা জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ ছবির মাধ্যমে। প্রথম সবকিছুই স্পেশাল। এটাই স্বাভাবিক।

বাংলানিউজ :  আগের মতো অভিনয় করতে ইচ্ছে হয় না?
রাজ্জাক :  তা তো হয়ই। কিন্তু বয়সের কথাও তো মাথায় রাখতে হবে। আমার বড় ছেলে নায়ক বাপ্পারাজের পরিচালনায় ‘কার্তুজ’ ছবিতে অভিনয় করেছি। এতে আমার বন্ধু প্রয়াত পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামও অভিনয় করেছিলেন। ওর প্রথম ছবি ‘ওরা ১১ জন’-এ আমি অভিনয় করেছিলাম।

বাংলানিউজ :  সর্বশেষ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘আয়না কাহিনী’ ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন। আবার কবে পরিচালনা করবেন?
রাজ্জাক :  বয়স হয়ে গেছে। এখন এসব চিন্তা করি না।

বাংলানিউজ : বয়সে বেড়ে যাওয়াটা কি কখনও পীড়া দেয়?
রাজ্জাক :  আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো- আমি এখনও সুস্থ আছি। আমার মনটাকে কিন্তু বার্ধক্য ছুঁতে পারেনি।

বাংলানিউজ : ভারতীয় ছবি মুক্তি পাচ্ছে এ দেশে, এটা কীভাবে দেখছেন?
রাজ্জাক :  আমাদের দেশে ভারতীয় হিন্দি ছবির মুক্তি পাবে, এটা আমি সুনজরে দেখি না। আমি তো দেশে ছিলাম না। দেশে ফেরার পর এসব খবর পাচ্ছি। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একটি ছবি (রোমিও বনাম জুলিয়েট) দুই দেশে চলছে। সেটা ঠিক আছে। আমাদের ছবি চলুক। কিন্তু হিন্দি ভাষার ছবি কেনো এভাবে সারাদেশে মুক্তি দেওয়া হবে? এটা আমাদের শিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ সময় : ১৬০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।