ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

সংগীতশিল্পীরা কেন অভিনয়ে!

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৬
সংগীতশিল্পীরা কেন অভিনয়ে! (বাঁ থেকে) শাফিন আহমেদ, পার্থ বড়ুয়া, তাহসান, জন ও হৃদয় খান

নতুন এক প্রশ্ন উঠেছে নাটকপাড়ায়। সংগীতশিল্পীরা কেন অভিনয়ে? এর পক্ষে-বিপক্ষে চলছে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বিতর্ক। এটা চমক তৈরি বা প্রচার-প্রপাগান্ডায় এগিয়ে থাকার নতুন কৌশল বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

সংগীতশিল্পী হৃদয় খানের নায়ক হিসেবে নাটকে অভিষেকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন বিতর্কে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, হৃদয় আসছে ঈদে দুটি নাটকে অভিনয় করছেন। হৃদয় ছাড়াও ঈদের নাটকের তালিকায় আছেন আরও অন্তত চার-পাঁচজন গায়ক।   

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী পার্থ বড়ুয়া, আগুন, তাহসান খান- এই তিন তারকা নিয়মিতই অভিনয় করছেন নাটকে। কেউ কেউ চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। ঈদে একাধিক নাটক নিয়ে তারা আসছেন ছোটপর্দায়। পেশাগত জীবনে এই তিনজন গায়ক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয়। পরে নাম কামিয়েছেন অভিনয়েও। এই তারকাদের নাটকে অভিনয় এখন অনেকটাই নিয়মিত ব্যাপার।

সম্প্রতি নাটকে নাম লিখিয়েছেন মাইলসের জনপ্রিয় গায়ক শাফিন আহমেদ। হয়েছেন বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলও। ঈদে ‘রিদম অব লাইফ’ নামের একটি ছয় পর্বের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় থাকছেন এই কণ্ঠশিল্পী। নিকট অতীতে সামিনা চৌধুরী, বিপ্লব, বাপ্পা মজুমদার, পড়শিসহ আরও অনেক শিল্পীকেই নাটকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তারা যে শখের বশেই কাজগুলো করেছেন, আপাতত সেটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ঈদ বা উৎসবকেন্দ্রিক নাটকের নিয়মিত মুখ সংগীতশিল্পী জন কবির। ব্যতিক্রমী উপস্থাপনায় তিনিও পার্থ, আগুন বা তাহসানের মতো দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। ‘অভিনেতা’ তকমাটি জনের নামের বেশ মানানসই এখন! তার অভিনীত একাধিক জনপ্রিয় নাটক সেটাই প্রমাণ করে।

গত সপ্তাহে নাটকে অভিনয়ে এসে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন হালের ক্রেজ গায়ক হৃদয় খান। বেশ কিছু জনপ্রিয় গানের কারিগর এই গায়ক যেন পরিকল্পনা করেই মাঠে নেমেছেন! যদিও তার বক্তব্য অনুযায়ী এটা ‘শখের অভিনয়’। মোস্তফা কামাল রাজের নাটকে (রূপকথা) তিশার সঙ্গে শুটিং শেষ করতে না করতেই নতুন আরেকটি ঈদের নাটকে যুক্ত হয়েছেন হৃদয়, শুরু করেছেন শুটিংও। এস এ হক অলিকের নাটকটিতে হৃদয়ের নায়িকা চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। খবর হিসেবে এটি বেশ চমকও তৈরি করেছে।   

সংগীতশিল্পীদের নাটকে অভিনয়ের বিষয়টি হুট করেই আলোচনা তৈরি করেছে, এমন নয়। আগে থেকেই এ নিয়ে কথা উঠেছে। যেমনটা চলমান আছে সাংবাদিকদের গান লেখার বিষয়ে। এক পেশায় থেকে অন্য পেশায় কাজ করার বিষয়টিকে আজকাল অনেকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন, এ নিয়ে কিছু যৌক্তিক কারণও তারা বাতলে দিচ্ছেন।

শিল্পীদের নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে পরিচালক, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ শিল্পীরা বক্তব্য দিচ্ছেন। আলোচিত নির্মাতা সুমন আনোয়ার বিষয়টি নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করেছেন। ২৪ মে তিনি ফেসবুকে লেখেন, “যে হারে ক্রিকেটার, গায়কদের ‘নায়ক’ বানাচ্ছেন পরিচালক বন্ধুরা ‘চমক’-এর জন্য,  দেখবেন অধিক ‘চমক’-এর তাগিদে দয়া করে কেউ আবার এরশাদকে (হুসেইন মুহম্মদ) কাস্টিং করে ফেলবেন না প্লিজ, আর নিতে পারবো না। ”

সুমন আনোয়ারের স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেছেন আফরান নিশো, ভাবনা, ইরফান সাজ্জাদসহ আরও অনেক অভিনয়শিল্পী। তারা স্ট্যাটাসের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন। স্ট্যাটাসের একটি মন্তব্যকে ঘিরে তর্কও বেশ জমে ওঠে।

নিরীক্ষার খাতিরে সংগীতশিল্পীদের নাটকে অভিনয় কিংবা নাটকের শিল্পীদের গান গাওয়া- দুটোই চলবে। দর্শক সেগুলো গ্রহণ বা বর্জন করবেন- সেটা তাদের ব্যাপার। আর এ নিয়ে সমালোচকদের মুখও থেমে থাকবেনা। পেশাগত জায়গা থেকে বিষয়গুলো ‘বাঁকা চোখে’ দেখার অবকাশও রয়ে যাবে, চিরদিন…

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৬

এসও   

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।