ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘এগুলো শিল্পীদের জন্য মানসিক অত্যাচার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৬
‘এগুলো শিল্পীদের জন্য মানসিক অত্যাচার’ আশীষ খন্দকার

মঞ্চনাটকের গুণী অভিনেতা আশীষ খন্দকার। টিভি নাটক? কালেভদ্রে করেন, স্ক্রিপ্ট ও চরিত্র পছন্দ হলে।

পেশাজীবনে তিনি শিক্ষক। এর পাশাপাশি বিশেষ শিশুদের ‘ফ্রাইডে থিয়েটার স্কুল’ পরিচালনা করছেন।  ‘আমি অভিনয় নিয়ে লড়াই করতে পছন্দ করি না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভিনয়শিল্পীরা কাজ নিয়ে দৌঁড়ের মধ্যে আছে। আমি বরাবরই এসব থেকে অনেক দূরে। নিজেকে ভালো অভিনেতা বা পরিচালকও ভাবতে চাই না। অভিনয়ের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে আমার সম্পর্ক। টাকার জন্য অভিনয় করিনা। এ কারণেই টিভির পর্দায় আমার উপস্থিতি কম। চ্যানেলগুলো এখন বাণিজ্যিকীকরণে ব্যস্ত। দর্শক নাটকের শিল্পীদের দেখবে নাকি বিজ্ঞাপন দেখবে? সবকিছুই এখন কৃত্রিমতার চাদরে ঢাকা। মা, মাটির সঙ্গে মিশে থাকা অভিনয় এখন শহুরে ঘরে বন্দি। ’

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে কথাগুলো বলেছেন আশীষ।  জনপ্রিয় এই অভিনেতা আক্ষেপ নিয়ে আরও বলেন, ‘টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির গাফিলতির কারণে অভিনয়শিল্পীরা কষ্ট করে অভিনয় করছেন উত্তরার বিভিন্ন শুটিং হাউসে। ওখানকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ যে কোনো মানুষের জন্যই শারীরিক ক্ষতির কারণ। বাড়িগুলোর মধ্যে নেই আলো-হাওয়া ঢোকার ব্যবস্থা। এ ছাড়া লাইটের ক্ষতিকর তাপমাত্রার মধ্যে টানা ১৫ দিন যে কোনো মানুষ কাজ করলে সে শারিরীক সমস্যায় ভুগবে। ক্যান্সারসহ বড় বড় রোগ তার শরীরে বাসা বাঁধবে। এমন বদ্ধ জায়গায় কখনো শিল্পকে বন্দি করে রাখা যায় না। নাটকের কাজ মানেই উত্তরার শুটিং হাউস। এই জায়গাটির প্রতি ব্যবস্থাপকদের নজর দিতে হবে। আমার মতে, সবাই একজোট হয়ে আন্দোলন করা উচিত। এ বিষয়ে সরকারি সহযোগিতাও দরকার। ’

আশীষ খন্দকার নাটকের এখনকার পরিস্থিতি নিয়ে বলেছেন। তার মতে, ‘নাটকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বাজেট। এ ছাড়া শুটিংয়ের স্থানগুলো নিয়েও পরিচালকদের আরও ভাবতে হয়। বাজেটের সীমাবদ্ধতাসহ অল্প সময়ের মধ্যে একটি নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা চলছে সবার মধ্যে। এগুলো অভিনয়শিল্পীদের জন্য এক ধরণের মানসিক অত্যাচার। দিন-রাত পরিশ্রম করে আর যাই হোক, ভালো অভিনয় করা যায় না। সেই সঙ্গে ভালো অভিনেতা হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করা যায় না। ’ 

ঈদের কাজ প্রসঙ্গে আশীষ বললেন, ‘এবারের ঈদ উপলক্ষে তিনটি নাটকে অভিনয় করেছি। গল্প ভালো ছিলো বলেই রাজি হয়েছি। আজকাল নতুনদের মধ্যে একধরণের প্রতিযোগিতার ছাপ স্পষ্ট। অভিনয় নিয়ে প্রতিযোগিতা আমার কাম্য নয়। শিল্পকে নিজের মধ্যে লালন করা শিখতে হয়। ’ 

অনন্য ইমনের ‘অটো বায়োগ্রাফ’ নামে নাটকে অভিনয় করেছেন আশীষ। এতে তার সহশিল্পী অপর্ণা ঘোষ। গল্পে আশীষ চিত্রশিল্পীর ভূমিকায় থাকছেন। ব্যক্তিজীবনেও ছবি আঁকাআঁকি করেন তিনি। ঈদের ৭ম দিন রাতে নাটকটি প্রচার হবে দেশটিভির পর্দায়।  

এ ছাড়া বিপুল রায়হানের পরিচালনায় ‘ময়নাগুড়ি টি স্টেট’ নামক একটি টেলিছবিতে কাজ করেছেন আশীষ। এখানে তার সহশিল্পী হিল্লোল, নওশীন, শাহেদ, ঈশানা প্রমুখ। আশীষ জানান, টেলিছবির গল্পটি বেশ রোমাঞ্চকর। এর সম্পূর্ণ দৃশ্যধারণ হয়েছে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। এখানে তিনি অভিনয় করেছেন ভাড়াটে খুনির চরিত্রে।  

অঞ্জন আইচের নাটক ‘কাক অথবা ক্যাকটাস’-এও আশীষের চরিত্রটি বেশ ভিন্ন। এখানে তিনি একজন মনোবিজ্ঞানীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এতে আরও অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মুস্তাফা ও শতাব্দী ওয়াদুদ। এটি ঈদের দিন এসএ টিভিতে প্রচার হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৬
জেএমএস/এসও 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।