ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ আইসিইউতে

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ আইসিইউতে নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ

ঢাকা: নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফুসফুসের সংক্রমণ ও অ্যাজমার সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে থাকা অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীনের শারীরিক অবস্থা সোমবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলের দিকে হঠাৎ অবনতির দিকে গেলে তাকে রাত পৌনে ৮টার দিকে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীনের সরাসরি ছাত্র সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, স্যার দীর্ঘ দিন থেকে ফুসফুসের সংক্রমণ ও অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন। কিছু দিন ধরেই স্যারের শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। বিকেলের দিকে স্যার একেবারেই শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পরে তাকে অ্যাপোলোতে আনা হয়েছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানা গেছে, হি ইজ নট আউট অব ডেঞ্জার।

গোলাম কুদ্দুছ জানান, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীনের দুই ছেলেই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। বাবার অসুস্থতার খবর শুনে দু’জনেই রওনা হয়েছেন দেশের পথে।

১৯৩৫ সনে ১৮ জানুয়ারী চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার হাবিবপুর থানার আইহো গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ। ১৯৪৭ এর দেশ-বিভাগের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার কানারহাট গ্রামে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।  

প্রফেসর মমতাজ উদ্দীন মালদাহ জেলা স্কুল, ভোলাহাট রামেশ্বর পাইলট ইনস্টিটিউশন এবং রাজশাহী সরকারি কলেজে লেখাপড়া করেন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি জড়িয়ে পড়েন বাংলার রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির আন্দোলনে। রাজশাহীর ছাত্রনেতা ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুর  সান্নিধ্যে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে ভাষার দাবিতে আন্দোলন সংগঠনে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারির রাতে রাজশাহী সরকারি কলেজের মুসলিম হোস্টেলের ইট কাদামাটি দিয়ে যে শহীদ মিনার গড়ে উঠেছিল, তাতে অধ্যাপক মমতাজউদ্দীনও ভূমিকা রেখেছিলেন। বাংলা ভাষার লড়াইয়ে ময়দানের লড়াকু  এ সৈনিক জেল খেটেছেন  একাধিকবার।  

কর্মজীবনে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও পরে  ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়ন কমিটিতে একজন উচ্চতর বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ছিলেন।

তার লেখা নাটক “কী চাহ শঙ্খচীল” এবং “রাজার অনুস্বারের পালা” কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল। নাট্যচর্চায় অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক পান ১৯৯৭ সালে।
 
এছাড়াও তিনি বালা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা; অক্টোবর ১৬, ২০১৮
এইচএমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।