ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বাবাকে হারানোর দিনে প্রিয় সুবীরকে হারালাম: রফিকউজ্জামান

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৯
বাবাকে হারানোর দিনে প্রিয় সুবীরকে হারালাম: রফিকউজ্জামান রফিকউজ্জামান-সুবীর নন্দী

মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর ৪টা ২৬ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন একুশে পদক প্রাপ্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী।

গুণী এই শিল্পীর ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের অধিকাংশ জনপ্রিয় গানের রচয়িতা দেশ বরেণ্য গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান।

দুজনের প্রথম পরিচয়, একসঙ্গে গান করা’সহ তাদের কাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় বাংলানিউজের কাছে শেয়ার করেছেন শোকাহত রফিকউজ্জামান।

পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

১৯৭০ সালে সিলেট বেতার কেন্দ্রে সুবীর নন্দীর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। তখন সে সিলেট বেতারেই গান করতো। সে সময় আমিও বেতার-টেলিভিশনের গানই বেশি লিখতাম।

এরপর ১৯৭৬ সালের দিকে সুবীর ঢাকায় আসে। সে ঢাকায় আসার পর আমি, সত্য সাহা, ও খন্দকার নূরুল আলম মিলে বেশ কিছু নতুন গান করার পরিকল্পনা করি। লক্ষ্য ছিলো নতুন শিল্পীদের তুলে আনা। সুবীর গাইতো চমৎকার। ওর গায়কী আমার মনে খুব ধরেছিলো।

১৯৭৬-৭৭ সালের মধ্যে আমি সুবীরের জন্য লিখলাম- ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার শত্রু বলে গণ্য হলাম (সুর: সত্য সাহা)’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে (সুর: খন্দকার নূরুল আলম)’, ‘মান ভাঙাতে জীবন (সুর: খন্দকার নূরুল আলম)’। গানগুলো প্রকাশের পর শ্রোতামহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। হবেই বা কেনো? ওর যে গায়কী- এই যোগ্যতা তো সব শিল্পীর থাকে না। এককথায় সুবীর নন্দীই আমার প্রিয় শিল্পী।

গানগুলো জনপ্রিয় হওয়ার পর আমরা বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমার জন্য অনেক গান করেছি। এখন অনেক কিছুই মনে করতে পারছি না। আমার লেখা অনেক গান সুবীরের কণ্ঠে শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এর মধ্যে দেশাত্মবোধক গানও রয়েছে। দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অধিক জনপ্রিয় হয়েছিলো ‘কত হাজার বছর পরে’, ‘কাঙ্খে কলসি গাঁয়ের রুপসী’ ‘গলির মোড়ে ভাঙা বাড়ীটা’ গানগুলো। এছাড়া ‘দেবদাস’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’সহ অনেক সিনেমায় আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি।

আরও কত কথা। বলতে কষ্ট হচ্ছে খুব (বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন)। আমি খুব আশ্বস্থ হয়েছিলাম সুবীরের চোখ মেলার খবরটি শুনে। কিন্তু লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় একাধিকবার হার্ট অ্যাটাকের খরবটি শুনে ফের আশাহত হয়েছি। মানে, আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাই হলো (দীর্ঘশ্বাস)।

৭ মে দিনটি আমার জন্য চির শোকের হয়েই থাকলো। ১৯৯৪ সালের এই দিনে আমার বাবাকে হারিয়েছিলাম। আজ সুবীরকে হারালাম। একই দিনে দুই প্রিয় মানুষকে হারালাম। দোয়া-প্রার্থনা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। সুবীর তুমি ভালো থেকো। আমার, আমাদের চেতনায় থেকো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৯
ওএফবি

**সুবীর নন্দীর মরদেহ আসবে বুধবার
**সুবীর নন্দীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
**‘ও আমার উড়াল পংখী রে’
**সুবীর নন্দী আর নেই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।