ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

মহানায়িকা চলে যাওয়ার ছয় বছর

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
মহানায়িকা চলে যাওয়ার ছয় বছর

মহানায়িকা সুচিত্রা সেন রূপ, লাবণ্য, আকর্ষণীয় শারীরিক গড়ন এবং অতুলনীয় অভিনয়ের জাদু দিয়ে কোটি হৃদয়ে আজও সমুজ্জ্বল। বাংলা সিনেমাকে তিনি নিয়ে গেছেন এক অন্য উচ্চতায়। কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি)।

সুচিত্রা ছিলেন রহস্যময়ী। তবে সব রহস্যের ইতি টেনে কোটি ভক্তকে চোখের জলে ভাসিয়ে ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮২ বছর বয়সে দেহ ত্যাগ করেন তিনি।

 

সুচিত্রা সেনের প্রকৃত নাম রমা দাশগুপ্ত। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের বৃহত্তর পাবনার সিরাজগঞ্জ মহকুমার ভাঙাবাড়ি গ্রামে নানাবাড়িতে তার জন্ম। পাবনা শহরের বাড়িতে কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। তবে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় চলে যান তিনি।  
উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন

বড় পর্দায় সুচিত্রার যাত্রা শুরু হয় ১৯৫২ সালে। সব মিলিয়ে ৬০টি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে বাংলা ৫৩টি এবং হিন্দি ভাষার ৭টি সিনেমায় তাকে দেখা গেছে। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘শেষ কোথায়’ হলেও মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম বাংলা সিনেমা ‘সাত নম্বর কয়েদি’। আর প্রথম হিন্দি সিনেমা ‘দেবদাস’ মুক্তি পায় ১৯৫৫ সালে।

১৯৫৪ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ও ‘অগ্নিপরীক্ষা’ সিনেমা সুচিত্রাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়।

রূপালি পর্দায় সুচিত্রা সেনের নায়ক হিসেবে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি সফল হয়েছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। উত্তম-সুচিত্রা জুটির ৩০টি বাংলা সিনেমা সাফল্য পায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘সবার উপরে’, ‘পাপমোচন’, ‘শিল্পী’, ‘সাগরিকা’, ‘পথে হল দেরি’, ‘হারানো সুর’, ‘গৃহদাহ’, ‘প্রিয় বান্ধবী’ ইত্যাদি।  

অভিনয়ে আসার আগেই সংসার জীবন শুরু হয় সুচিত্রার। ১৯৪৮ সালে কলকাতার শিল্পপতি আদিনাথ সেন তনয় দিবানাথ সেনের সঙ্গে তিনি ঘর বাঁধেন। তার একমাত্র মেয়ে মুনমুন সেন। দুই নাতনি রাইমা সেন ও রিয়া সেনও অভিনেত্রী।

১৯৬৩ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সাত পাকে বাঁধা’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান মহানায়িকা। ১৯৭২ সালে পান ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’। এছাড়া ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলাবিভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে।  
সুচিত্রা সেন

সুচিত্রা সেন ছিলেন অভিমানী। কোন এক অজানা কারণে প্রায় ৩৬ বছর তিনি ছিলেন লোকচক্ষুর আড়ালে। কলকাতায় একাকী থাকতেন বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে। স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়ে রহস্যময়ী ছিলেন আমৃত্যু।

২০১৪ সালে দখলমুক্ত কর হয় পাবনা শহরে সুচিত্রা সেনের বাড়ি। ২০১৭ সালের ০৬ এপ্রিল দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় কিংবদন্তি মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের সংগ্রহশালা।  

তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সকালে মহানায়িকার পৈত্রিক বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এছাড়া বিকেলে সংগ্রহশালা চত্বরে প্রদর্শিত হবে সুচিত্রা সেন অভিনীত বাংলা সিনেমা।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।