ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

গৌরাঙ্গ থেকে হয়ে ওঠা মিঠুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২০
গৌরাঙ্গ থেকে হয়ে ওঠা মিঠুন

কলকাতা: টালিগঞ্জ টলিপাড়া থেকে বলিউডে সফরটা মোটেই সহজ ছিল না। তবে নানান  চড়াই-উতড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এখনো একই ভাবে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন যে মানুষটি, তিনি মিঠুন চক্রবর্তী। অনেকের পক্ষে যা অসাধ্য, তা সাধন করে দেখিয়েছেন তিনি।
 

১৯৫২ সালে ১৬ জুন বরিশালে জন্ম মিঠুন চক্রবর্তীর। তার পারিবারিক নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী।

বাবা বসন্ত কুমার চক্রবর্তী ও মা শান্তিরানী চক্রবর্তীর সঙ্গে  কলকাতায় স্থায়ী হন। ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুলে শিক্ষা জীবন শুরু করে পরবর্তীতে কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজ থেকে কেমেস্ট্রি নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন মিঠুন।

এরপর অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়তে শিক্ষা নেন পুনের ফিল্ম ইনস্টিটিউ থেকে। অভিনয় শেখার পাশাপাশি মিঠুন প্রশিক্ষণ নেন মার্শাল আর্টসের। তাতেও ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেছিলেন তিনি। অবশ্য বরাবরই স্বাস্থ্য সচেতন ছিলেন। এখনো নিয়মিত শরীর চর্চা করেন। মিঠুন চক্রবর্তী

বলিউডে প্রবেশ করা তার কাছে অনেক কঠিন হয়ে উঠছিল। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। কখনো বাঙালি এই অভিনেতার চোখে দেখা যায়নি হতাশার ছাপ। জানা যায়, স্ট্রাগলিং-এর পাশাপাশি নিজের জীবন-জীবিকা চালানোর জন্য আইটেম ডান্সার ও অভিনেতা হেলেনের সহকারী ডান্সার হিসাবে কাজ করতে শুরু করেন। সেই সময় বলিউড তাকে চিনত ‘রাণা রেজ’ নামে।

১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ দিয়ে ক্যারিয়ারের পথ চলা শুরু হয় মিঠুনের। সেই সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কার পান। রাতারাতি গৌরাঙ্গ থেকে হয়ে ওঠেন মিঠুন চক্রবর্তী। এরপরেই মিঠুন জনপ্রিয় হন ‘ডিস্কো ডান্সার’ সিনেমার জন্য। বলিউডের এই ডান্সার ছাপিয়ে যান দেশের বাইরেও।

এরপর ‘অগ্নিপথ’ ও ‘জল্লাদ’ সিনেমাতে সেরা অভিনেতার জন্য ভারতীয় ফিল্ম ফেয়ার অ্যায়ার্ড পান মিঠুন। ১৯৯২ সালে ‘তাহাদের কথা’র জন্য এবং ১৯৯৬ ‘স্বামী বিকোনন্দ’র জন্য জাতীয় পুরষ্কার পান।  

শুধু বাংলা বা হিন্দি সিনেমায় নয়। পাঞ্জাবী, ওড়িয়া, ভোজপুরি, তামিল, তেলুগু, কন্নড় সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন মিঠুন। এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে সাড়ে তিনশ'রও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন মিঠুন। কাজ করেছেন টেলিভিশন সঞ্চালক হিসাবেও।
অভিনেতা ছাড়াও মিঠুন একজন সফল ব্যবসায়ী। বর্তমানে কর্নাটকের রাজধানী ব্যাঙ্গালোরে বাসিন্দা তিনি। মিঠুন ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হোটেল ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত। ওটি, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, কলকাতা, তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জায়গায় হোটেল রয়েছে তার।

যদিও তিনি কোনোদিনই সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তবুও এক সময় পশ্চিমবাংলার অস্থির সময়ে বহু যুবকের মত গতানুগতিক ভাবধারায় মজেছিলে নাকশালবাদে।

২০১৩ সালে ৩ এপ্রিল তৃনমূল কংগ্রেসের টিকিটে রাজ্যসভার সদস্য হন। তবে তাও বেশিদিন টেকেনি। আড়াই বছরের একটু বেশি সময় রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি, বিশ হাজার কোটি রুপির আর্থিক কেলেঙ্কারি ‘সারদা কাণ্ড’-এ  তার নাম জড়ানোর পর তিনি ওই পদ থেকে ইস্তফা দেন।

সম্প্রতি বলিউড সিনেমা ‘তাসখন্দ ফাইল’-এ দেখা গিয়েছে মিঠুনকে। তবে আরও অনেকগুলি সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ হাতে আছে তার। একইভাবে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন বলে মিঠুন চক্রবর্তী নয়, আট থেকে আশি বছরের সকলেরই কাছে তিনি এখন ‘মিঠুন-দা’।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২০
ভিএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।