ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

১০২ বছর বয়সে প্রয়াত কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী অমলা শঙ্কর

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২০
১০২ বছর বয়সে প্রয়াত কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী অমলা শঙ্কর অমলা শঙ্কর

না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী অমলা শঙ্কর। কিংবদন্তী এই নৃত্যশিল্পীর মৃত্যুর খবরটি ভারতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যকে নিশ্চিত করেছেন তার নাতনি, নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্করের মেয়ে শ্রীনন্দা শঙ্কর।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০২ বছর।  

বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় ভুগছিলেন অমলা শঙ্কর। শুক্রবার (২৪ জুলাই) সকালে কলকাতায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন উদয় শঙ্কর (কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী) পত্নী।

শ্রীনন্দা তার ইনস্টাগ্রামে অমলার শঙ্করের মৃত্যুর বিষয়ে লেখেন, ১০২ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ঠাকুরমা। আমরা গত মাসেই তার জন্মদিন উদযাপন করেছিলাম। মনটা বড্ড অশান্ত, মুম্বাই থেকে কলকাতা যাওয়ার কোনও বিমান নেই! তার আত্মার শান্তি কামনা করি। একটা যুগের অবসান হল। অনেক ভালোবাসা ঠাম্মা।

অমলা শঙ্কর-শ্রীনন্দাঅমলা শঙ্করের দেখানো পথেই এগিয়েছেন গোটা বিশ্বের অসংখ্য নৃত্যশিল্পী। অমলা শঙ্করের নৃত্য পরম্পরায় সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলার সংস্কৃতি।

১৯১৯ সালের ২৭ জুন যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন অমলা শঙ্কর। অবশ্য তখন তিনি ছিলেন অমলা নন্দী। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই মঞ্চে নিজের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে শুরু করেন অমলা। ১৯৩১ সালে প্যারিস ইন্টারন্যাশনাল কলোনিয়াল এগজিবিশনে অংশ নিতে ফ্রান্সের রাজধানীতে গিয়েছিলেন অমলা। সেখানেই আলাপ উদয় শঙ্করের সঙ্গে। তারপর থেকেই উদয় শঙ্করের কাছ থেকে নাচের তালিম নেওয়া শুরু করেন তিনি। ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশে-বিদেশে।  

১৯৪২ সালে গুরু উদয় শঙ্করের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন অমলা শঙ্কর। বিশ্বের অন্যতম চর্চিত নৃত্যশিল্পী দম্পতি হয়ে উঠেন উদয় শঙ্কর ও অমলা শঙ্কর। উদয় শঙ্কর পরিচালিত ছবি ‘কল্পনা’তে উমার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অমলা শঙ্কর। ২০১২ সালে এই ছবি প্রদর্শিত হয় কান চলচ্চিত্র উৎসবে। সেখানে অংশ নিয়েছিলেন অমলা শঙ্কর।  

গত জুনেই নিজের ১০১ তম জন্মদিন পালন করেন কিংবদন্তি এই নৃত্যশিল্পী। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অমলা শঙ্করকে বঙ্গ বিভূষণ পুরষ্কারে ভূষিত করেন৷ শেষবার অমলা শঙ্করকে মঞ্চে দেখা গেছে ২০১১ সালে। ৯২ বছর বয়সে ‘সীতা স্বয়ম্ভর’ নৃত্যনাট্যে অভিনয় করেছিলেন তিনি। রাজা জনকের চরিত্রে দেখা মিলেছিল তার। সেই বছরই আরেকটি নৃত্যনাট্যে ‘মিসিং ইউ’তেও অংশগ্রহণ করেন তিনি।  

নাচের পাশাপাশি ছবি আঁকতেও ভালোবাসতেন অমলা শঙ্কর। তবে কোনওদিন তুলি দিয়ে ছবি আঁকেননি তিনি। হাত দিয়েই ক্যানভাসে রঙ ছড়াতেন তিনি। তার কিছু চিত্র ‘লাইফ অব বুদ্ধ’ এবং ‘রামলীলা’র মতো নাটকে ব্যবহৃত হয়েছে।  

অমলা শঙ্করের মৃত্যুতে একটা যুগের অবসান হল। তিনি রেখে গেলেন মেয়ে মমতা শঙ্কর, পুত্রবধূ তনুশ্রী শঙ্কর ও নাতনি শ্রীনন্দা শঙ্করকে। লেজেন্ডারি নৃত্যগুরু উদয় শঙ্করের ঘরানাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে লালন করে চলেছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।