ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

করোনা: চেনা গল্পের অসাধারণ নির্মাণের নাটক ‘টু-লেট’

ওমর ফারুক বিশাল, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২০
করোনা: চেনা গল্পের অসাধারণ নির্মাণের নাটক ‘টু-লেট’ ‘টু-লেট’ নাটকের একটি দৃশ্য

দেশীয় নাটকে দর্শকের আস্থাটা এখন আর আগের মতো নেই। গতানুগতিক গল্প, শিল্পহীন বাণিজ্যিক চিত্রনাট্যের একঘেয়েমিতা কিংবা মানহীন গল্পের ছড়াছড়ি, নির্মাণে অদক্ষতা ও দক্ষ নির্মাতার অভাব- এই হচ্ছে সমকালীন বাংলা নাটকের চিত্রচাল।

 

এছাড়া আরেকটা বড় সমস্যা হলো, হাতে গোনা কয়েকজন শিল্পীকেন্দ্রীয় হয়ে পড়েছে আমাদের নাট্যশিল্প। নির্মাতারা শুধু তাদের নিয়েই কাজ করছেন, নতুন শিল্পী তৈরিতে তাদের উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এটা দেশীয় নাটকের প্রতি দর্শকের অনাস্থার অন্যতম একটি কারণ বটে।

আবার গল্প ভালো হলেও নির্মাণে শৈলী থাকছে না। হচ্ছে এর বিপরীতও। অনেক সময় শিল্পী নির্বাচনের ব্যর্থতাও লক্ষ করা যায়। রয়েছে বাজেট সমস্যাও। হ্যাঁ, গল্পের দাবি পূরণে বাজেট একটা ব্যাপার। সবকিছুর সমন্বয় ঠিকঠাক হওয়ার সত্ত্বেও শুধুমাত্র বাজেটের অভাবে কিছু কিছু নাটক প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে না। দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ করে আসছেন নির্মাতারও।

‘টু-লেট’ নাটকের একটি দৃশ্যবলে নেওয়া ভালো, অসংখ্য প্রতিকূলতার ভিড়েও ভালো নাটক তৈরি হচ্ছে। যদিও সেটা প্রত্যাশার তুলনায় নিতান্তই কম। এবারের ঈদ আয়োজনে নির্মিত হওয়া তেমনি একটি নাটক ‘টু-লেট’। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এটি নির্মাণ করেছেন অনিমেষ আইচ।

২৫ মিনিট আয়ুর এই নাটকে অভিনয় করেছেন- আশনা হাবিব ভাবনা, শিল্পী সরকার অপু, সায়েদ মোশাররফ জয়রাজ, রিজভী সাখাওয়া হোসাইন, প্রমিতি প্রমা ও সানজিদ রহমান খান। শাহরিয়ার শাকিল প্রযোজিত নাটকটি উন্মুক্ত হয়েছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি সিরিজের ইউটিউব (ড্রামা) চ্যানেলে।

নাটকের গল্প, চরিত্র ও সংলাপ মিলিয়ে নির্মাণ হয়েছে চমৎকার। করোনা পরিস্থিতির চরম বাস্তবতা সাবলীলভাবে তুলে আনা হয়েছে ‘টু লেট’- এ। এককথায় বলতে গেলে, করোনা পরিস্থিতি ও প্রসঙ্গের দারুণ প্রাসঙ্গিকতার নাটক হয়ে উঠেছে এটি। নির্মাতা অনিমেষ আইচ তার ষোলআনা দক্ষতার ছাপ রেখেছেন এই নাটকে, নিমাণশৈলীতে।

করোনায় শহরের মধ্যবিত্ত জীবন বাস্তবতার পুরো প্রেক্ষাপট ২৫ মিনিটের এই নাটকটিতে উঠে এসেছে। কিছু মানুষ সবসময়ই সুযোগ সন্ধানী, পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে তারা আপন-পর হয়। কেউ আবার উল্টে গেলেও পাল্টায় না, চরিত্রের নিজস্বতা কিংবা আচরণগত বৈশিষ্ঠ্য এক ও অভিন্ন থাকে যে কোনো পরিস্থিতিতে। কেউ কেউ আবার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অক্ষমতার কারণে দুঃসময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারার যন্ত্রণায় ভোগে।

একজন বাড়িওয়ালা এবং একটি ভাড়াটে পরিবারের মধ্যকার করোনার পরিস্থিতির চরম বাস্তবতার বিষয়গুলো ‘টু-লেট’ নাটকে আয়নার মতো ঝলমলে ভেসে উঠেছে। একটি পরিবারের মধ্য দিয়ে বলে দিয়েছেন পুরো মধ্যবিত্তের অসহনীয় বাস্তবতা। এখানেই নির্মাতার নির্মাণের সার্থকতা। তবে হ্যাঁ, ভিউর বিচারে এই নাটকের মানদণ্ড করা নেহায়েৎ বোকামি ছাড়া কিছু নয়!

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২০
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।