ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বিকল্পমাধ্যমের ভয় নিয়ে শুরু ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০
বিকল্পমাধ্যমের ভয় নিয়ে শুরু ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

প্রতিটি বড় আবিষ্কারই সমালোচিত হয়েছে। প্রথম যখন বাষ্পচালিত ইঞ্জিন আবিষ্কার হলো, অনেকে তাকে বলেছে, ‘কালো ধোঁয়া ছাড়া দানব’।

যখন টেলিভিশন এলো, ভয় পেয়ে গিয়েছিল সিনেমা শিল্প। ছোট পর্দার কাছে এই বুঝি মার খাবে বড় পর্দা। কুয়েন্টিন টারান্টিনোর ‘ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন হলিউড’ সিনেমাতেও তা কল্পিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তবে সুখের বিষয় হলো, বছরের পর বছর ধরে ছোট ভাইয়ের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে বড় ভাই। মানুষ প্রেক্ষাগৃহে যাওয়া বন্ধ করেনি।  

এবার বড় ভাইয়ের শরীরে কাঁপুনি তুলে দিয়েছে নবাগত স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো। অন্তত বিগত পাঁচ বছর ধরে নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন, হটস্টার, ডিজনি, জিফাইভের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো বিনোদন জগতে দাপুটে প্রভাব ফেলেছে। এখন তো বাড়ির টেলিভিশনের স্ক্রিন আরও বড় ও উন্নত। তদুপরি করোনা মহামারিতে মানুষ যখন গৃহবন্দি, ছয় মাস ধরে সিনেমা হল বন্ধ, তখন মানুষ বাধ্য হয়েই ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিনোদন ছাড়া জীবন তো একঘেয়ে। এখনও অধিকাংশ দেশে প্রেক্ষাগৃহ খোলার কোনো ভাব-লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সঙ্গতকারণেই বিশ্বজুড়ে সিনেমা শিল্পসংশ্লিষ্টরা প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন।

দুই বছর আগে কান চলচ্চিত্র উৎসবে নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজনের অরিজিনাল মুভি প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এর তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা করেছিলেন ফরাসি চিত্রনির্মাতা, পরিবেশক ও প্রদর্শকরা। তারা বিধান দেন, কান উৎসবে প্রদর্শিত সিনেমা অবশ্যই আগে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে হবে। অনেক সংগ্রাম করে তারা জিতে যান। হেরে যায় কান। কিন্তু এখন করোনাকালে চোখের সামনে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো রীতিমতো রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। আর দ্বাররুদ্ধ হয়ে আছে প্রেক্ষাগৃহ।  

এ বছর ৭৭তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায়। করোনা মহামারির করাল থাবায় প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত ইতালিতে সমস্ত ভয় কাটিয়েই হলো এই আয়োজন। উৎসব অঙ্গনের ভেতরে-বাইরে সবার মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। আসনবিন্যাসেও মানা হচ্ছে দূরত্ব। এতকিছুর পরও সিনেপ্রেমীরা মিলিত হয়েছেন একটাই আর্জি নিয়ে, ‘স্ট্রিমিং দানবদের হুমকি থেকে প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার আনন্দকে বাঁচাতে হবে’।  

বরাবরের মতোই ইতালিয়ান সিনেমা ‘দ্য টাইস’ প্রদর্শনের মাধ্যমে শুরু হয় ভেনিস উৎসব। তার আগে উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন ইউরোপের শীর্ষ সাতটি ফিল্ম ফেস্টিফ্যালের পরিচালকরা। এদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কানের পরিচালক থিয়েরি ফ্রেমক্সও। তারা সকলেই বড় পর্দার জন্য পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করেন।  

ইউরোপে সিনেমা শিল্পের এই সপ্তমহারথী এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, আজ খানিকটা অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগের মধ্যেও সিনেমা হল খুলছে। শুরু হচ্ছে চলচ্চিত্র উৎসবও। কারণ সবাই বুঝতে পারছে, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে সিনেমা ছাড়া কেউ থাকতেই পারছে না। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে বড় পর্দায় আরও অনেক দর্শকের কোলাহল ও নীরবতার সঙ্গে সিনেমা দেখার আনন্দ উপভোগ করতে সবাই মুখিয়ে আছে। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, আমাদের অবশ্যই প্রেক্ষাগৃহের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। আমরা সবাই- সিনেমার কলাকুশলী, পেশাদার, সমালোচক এবং আরও যারা একটি সিনেমাকে বাস্তবে রূপ দেন সবাই এক্ষেত্রে যত্নশীল হতে বদ্ধপরিকর।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২০
এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।