ঢাকা: বাংলাদেশের পথনাটকের অন্যতম পুরোধা নাট্যজন মান্নান হীরা আর নেই। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ গিয়াস বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বুধবার রাত ৮টার দিকে মান্নান হীরা তার শান্তিবাগের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন৷ শান্তিবাগ থেকে তাকে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
আহম্মদ গিয়াস বলেন, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নাট্যজন মান্নান হীরার মরদেহ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাখা হবে৷ এর পর বাদ যোহর শিল্পকলা একাডেমি মসজিদে জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিরাজগঞ্জে তার গ্রামের বাড়িতে৷ সেখানেই তার দাফন সম্পন্ন হবে৷
মান্নান হীরার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ সমাজের বিভিন্নস্তরের মানুষ৷
মান্নান হীরা পথনাটকের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন।
আমৃত্যু তিনি পথনাটক পরিষদের সভাপতি ও আরণ্যক নাট্যদলের অধিকর্তা। মান্নান হীরার নাট্য রচনার প্রধান উপাদান নিরন্ন মানুষ ও দরিদ্র জনপদ। বিশেষ করে তার পথনাটক বিশাল কৃষিজীবী মানুষ, তাদের উৎপাদন ও উপকরণ কেন্দ্র করে লেখা। তিনি প্রায় ১৫টি নাটক লিখেছেন।
উল্লেখযোগ্য নাটকগুলির মধ্যে আছে লাল জমিন, ভাগের মানুষ, ময়ূর সিংহাসন, সাদা-কালো ইত্যাদি। মূর্খ লোকের মূর্খ কথা মান্নান হীরা রচিত ও নির্দেশিত অন্যতম পথনাটক।
তার পথনাটক ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে নিয়মিতভাবে অভিনীত হয়ে থাকে। একই সঙ্গে তার একাধিক নাটক অনূদিত হয়ে দিল্লি, হংকং, পাকিস্তান, নেপলসহ অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়ে আসছে।
২০১৪ সালে তিনি সরকারের অনুদানে শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’ তৈরি করেন। এটি তার পরিচালিত একমাত্র চলচ্চিত্র। এর বাইরে ‘গরম ভাতের গল্প’ ও ‘৭১-এর রঙপেন্সিল’ নামে দু’টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেন।
২০০৬ সালে তিনি নাটক শ্রেণিতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২০/আপডেট: ০০১০
ডিএন/এএ/আরএ