সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ ও বন বিভাগের অভিযানে বিলুপ্ত প্রায় দুটি রাজ ধনেশ পাখিসহ দুই চোরা কারবারিকে আটক করা হয়েছে। পরে আটক দুজনকে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১০ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার বাজার স্টেশন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মো. আতোয়ার হোসেন (৫২) ও ময়মনসিংহ জেলা সদরের শস্যমালা পশ্চিমপাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. শামীম আহমেদ (২৯)।
সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী জানান, পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান পাখি ‘রাজ ধনেশ’। বাংলাদেশে পাখিটি বিলুপ্ত প্রায়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ পাখির অনেক অবদান। বুধবার দুপুরে বাজার স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি রাজ ধনেশ পাখি উদ্ধার করা হয়। এসময় পাখি দুটি বিক্রি করতে আসা আতোয়ার ও শামীমকে আটক করা হয়। বিকেলে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরাগ সাহা মো. আতোয়ার হোসেনকে এক বছর ও শামীম আহমেদকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
সিরাজগঞ্জ সামাজিক বনায়ন নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ খান বলেন, ইংরেজিতে গ্রেট হর্নবিল নামে এ পাখিটিকে বাংলায় রাজ ধনেশ বলা হয়। এটি বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রায় পাখি। এটির বাসস্থান, সিলেট, চিটিাগংসহ পাহাড়ি অঞ্চলে। চোরা কারবারিদের লোলুপ দৃষ্টিতে আস্তে আস্তে বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে এ পাখি। আমরা ডিবি পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে দুই পাখি চোরা কারবারিকে আটক করে সাজার আওতায় এনেছি।
রাজ ধনেশ পাখি সব মিশ্র চিরসবুজ বনেই বাস করত। এখন চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য বন বিভাগের গহীন বনে কালে ভদ্রে দু’একটি চোখে পড়ে। বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় রাজ ধনেশ পাওয়া যায়। অসাধু কিছু চক্র ধনেশ পাখি শিকার করে ‘ধনেশের তেল’ বিক্রি করে। এছাড়া অনেকে মাংস হিসেবে ধনেশ ধরে খায়। এমনকি প্রজননকালে স্ত্রী-ধনেশ যে ডিমে তা দেয়, কুঠির ভেঙে ওই ডিমও অনেকে খায়। ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ধনেশ। সারাদেশে এ পাখির সংখ্যা খুবই কম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
এসআই