ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ধ্বংসের পথে টাঙ্গুয়ার হাওড় ও বাইক্কা বিলের জীব বৈচিত্র্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৩
ধ্বংসের পথে টাঙ্গুয়ার হাওড় ও বাইক্কা বিলের জীব বৈচিত্র্য

ঢাকা: অসচেতনতা, দুস্কৃতিকারীদের কারণে দেশের মিঠা পানির বিল ‘টাঙ্গুয়ার হাওড়’ ও ‘বাইক্কা বিল’র জীব বৈচিত্র্য এখন ধ্বংসের পথে। সরকারি ও বেসরকারি পদক্ষেপ না নিলে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাবে।



শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে পরিবেশবাদী সংগঠন আইইউসিএন আয়োজিত ‘টাঙ্গুয়ার হাওড় ও বাইক্কা বিলের জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে ঝুঁকি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ সতর্কবার্তা দেন।

বক্তারা বলেন, “প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সাড়ে এগারো হাজার বিলের মধ্যে টাঙ্গুয়ার বিল একমাত্র মিঠা পানির বিল। এ বিলে বিরল প্রজাতির পাখি, জীব বৈচিত্র, মাছসহ সকল প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী প্রাণী রয়েছে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এগুলো আজ ধ্বংসের পথে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে দ্রুত উদ্যোগ না নিলে এটি ধ্বংস হয়ে যাবে। ”

 সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা হিসেবে লিজ পদ্ধতি বাতিল ও এ বিলসহ দেশের সকল বিলকে সংরক্ষিত ঘোষণা করে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করলে জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে উল্লেখ করে বক্তারা অভিযোগ করেন, “এ বিল ধ্বংস করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে এবং সরকারি কোন ব্যবস্থাপনা না থাকায় সকল জল-মহল ধ্বংসের পথে। ”

প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় অবিলম্বে জল-মহল ইজারা বাতিল করে এতে সরকার নজর দিলে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ বিল রক্ষা পাবে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।

তারা অভিযোগ করেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জল-মহল, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের আলাদা বিভাগ থাকলেও বাংলাদেশে নেই। অবিলম্বে আলাদা বিভাগ করে এসব রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে। ”

আইউসিএন এর প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী ড. ইশতিয়াক সোবহান জানান, টাঙ্গুয়ার বিল মাছ, পাখি ও জীব বৈচিত্র্যের অভয়ারণ্য। গত ছয় বছর আগে এ প্রকল্পের (আইউসিএন) আওতায় সরকার থেকে এ বিল লিজ নেয়া হয়। এর আয়তন ২৪ হাজার ২৬ একর। ৮৮ গ্রামে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাস করে। এখানে দুইশ’ প্রজাতির সামুদ্রিক জৈব, ১৪১ প্রজাতির মাছ যাদের মধ্যে ১৭ প্রজাতি বিরল, ২১৯ প্রজাতির পাখি, ১১ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৭ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। প্রতিদিন ২০ হাজার বুনো হাঁস প্রজাতির পাখি এখানে অবস্থান করে।

তিনি জানান, “শিকারীদের অবাধে শিকার, বাচ্চা, ডিম নষ্ট করার কারণে প্রকৃতির এ প্রাণীটি ধ্বংসের পথে। বিলের জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতি গ্রামে কমিটি করে দেয়া হলেও অবাধে মাছ ও পাখি শিকার করা হচ্ছে। ধ্বংস করা হচ্ছে জীব বৈচিত্র্য। ”

গোল টেবিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাখি বিশেষজ্ঞ এনামুল হক, থাইল্যান্ডের মাহিডল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পাখি বিশেষষ্ণ প্রফেসর ফিলিপ ডি রাউন্ডসহ বিভিন্ন জীব বৈচিত্র্য রক্ষাকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৩
আরইউ/সম্পাদনা: হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।