ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

জলের বেগুনি কালিম ডাঙায়

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৭
জলের বেগুনি কালিম ডাঙায় বেগুনি কালিম পাখি/ ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: ঠোঁটটা দেখতে পুরোপুরি লাল। লালের আবরণ ঠোঁটের মাথার পেছন পর্যন্ত বিস্তৃত। ডানা সবুজ। তবে লেজের নিচের দিকটা সাদা। দেহের সিংহভাগ অংশ নীলে মোড়ানো। বেগুনি রংয়ের আভা ভর করেছে নীলের ওপর। লেজ ও পাখার শেষ অংশে রয়েছে কালচে ভাব।

পা দু’টো বেশ লম্বা। তার থেকেও লম্বা পায়ের আঙুলগুলো।

হাঁসের মতো না পা দু’টো। তবে ভালো সাঁতার কাটতে পারে ওরা। মাথার ওপরটা ঢাকা বর্মে। ঠোঁটের গোড়া মোটা হলেও দু’পাশ থেকে বেশ চাপা। চোখের রংটা অনেকটা রক্তলাল।

নাম তার বেগুনি কালিম বা বেগুনি কালেম। ইংরেজিতে purple swamphen বলা হয়ে থাকে। দেখতে ভারি সুন্দর। জলের পাখি এটি। তবে ক্ষেত্র বিশেষ সময় ডাঙায় দেখা মেলে ভারি সুন্দর এ পাখিটিকে।
 
হ্যাঁ, বেশ কয়েকজন কলেজ পড়ুয়া তরুণের হাতে দেখা গেলে দু’টি বেগুনি কালেম পাখি। সবাই বগুড়া আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী তারা। একইসঙ্গে তারা পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’র সঙ্গে জড়িত।
 
সম্প্রতি বেগুনি কালেম নামের পাখি দু’টি উদ্ধার করে তারা। শেষশেষ সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে পাখি দু’টি জাতীয় উদ্যানে পাঠিয়ে দেন পরিবেশবাদী সংগঠনের এসব তরুণরা।   
 
সোমবার (০২ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বগুড়া প্রেসক্লাবের সামনে পাখি দু’টি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’র সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা তরুণ শিক্ষার্থীরা।
 
অত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রায় সপ্তাহখানেক আগে তাদের কাছে খবর আসে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় বেদে সম্প্রদায়ের কিছু মানুষের নিকট বিরল প্রজাতির পাখি দেখা গেছে। এসব পাখির দেখা এ এলাকায় কখনো মেলেনি। এমনকি পাখি দু’টিকে অনেক দামে বিক্রির চেষ্টা করছে তারা।

এ খবর পাওয়ার পর তারাসহ কয়েকজন মিলে ছুটে যান ওই এলাকায়। উপজেলার বুড়িগঞ্জ এলাকায় গিয়ে তাদের খোঁজ পান। সেখান থেকে পাখি দু’টি উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করেন এসব তরুণরা।

এরপর পাখি দু’টি উদ্ধারের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্লা মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। তিনি পাখি দু’টি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তাদের। সে অনুযায়ী তিনি কাহালু উপজেলা সামাজিক বন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। রোববার (০১ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সেখান থেকে পাখি দু’টি উদ্ধার করা হয়।
 
তরুণরা আর জানান, পরবর্তীতে পাখি দু’টি অবমুক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবারো বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। সোমবার (০২ অক্টোবর) দুপুরের পর পাখি দু’টি অবমুক্তির জন্য জাতীয় উদ্যানের পরিচালক মোল্লা রেজাউল করিমের কাছে প্রেরণ করেন যোগ করেন এসব তরুণ পরিবেশবাদী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৭
এমবিএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।