ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বাইক্কা বিলে শীতের পরিযায়ী ‘গিরিয়া হাঁস’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯
বাইক্কা বিলে শীতের পরিযায়ী ‘গিরিয়া হাঁস’ বাইক্কা বিলে ‘গিরিয়া হাঁস’। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বাইক্কা বিলের সুউচ্চ টাওয়ার। এর ওপর উঠে দূরবীক্ষণযন্ত্রে কিছু্ক্ষণের মধ্যেই দৃষ্টিসীমানায় এলো ‘গিরিয়া হাঁস’। পাতি-শরালিদের দলে দেখা গেলো তাকে। পুরুষ হাঁসটি তখন চঞ্চু (ঠোঁট) দিয়ে নিজের ডানা নাড়তে ব্যস্ত।

তুলনামূলকভাবে এবার বাইক্কা বিলে পাখির উপস্থিতি কম। তার মধ্যে হঠাৎ করে ‘গিরিয়া হাঁস’র দেখা পাওয়া গেলো।

খুশি যেন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে! বাইক্কা বিলে শীতের পরিযায়ী ‘গিরিয়া হাঁস’।

গিরিয়া হাঁসের দেহ ৩৭ থেকে ৪১ সেন্টিমিটার। শীত মৌসুমে বাইক্কা বিল ছাড়াও আমাদের দেশের অন্যান্য বিল-জলাশয়ে এদের দেখা যায়। এরা বেশ ভালো অবস্থানেই আছে। পুরুষ হাঁসটি ঝিঁঝিঁ-পোকার মতো ডাকে।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং পাখি গবেষক ও লেখক ইনাম আল হক বাংলানিউকে বলেন, গিরিয়া হাঁসকে বাইক্কা বিলে শীত মৌসুমে দেখা যায়। এরা হাঁসদের মধ্যে বেশ ছোট। জলজ হাঁসদের মধ্যে কেউ কেউ ধীরে উড়ে, কেউ কেউ আবার দ্রুত। এরা কিন্তু খুব জোরে তীরের মতো দ্রুত উড়তে পারে। বাইক্কা বিলে ‘গিরিয়া হাঁস’।  ছবি: বাংলানিউজতিনি আরও বলেন, এ হাঁসের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এদের চোখে উপর সাদা এবং বড় ভ্রুলেখা রয়েছে। সাদা ভ্রুরেখাটি দেখেই বোঝা যায় যে- এটি ‘গিরিয়া হাঁস’। এটি তার ‘স্পেশালিটি’। ছেলে হাঁসটির ভ্রুরেখা বেশ স্পষ্ট হলেও মেয়ে হাঁসটির ভ্রু বেশ অস্পষ্ট। এ হাঁসদের আরও একটি বিশেষ দিক হলো- ওর চঞ্চু অর্থাৎ ঠোঁট কিন্তু জুতার মতো। ছোট কিন্তু মোটা। মনে হয় যেন একটা জুতা দেখছি এমন! এই হাঁসটি বড় বড় দলে থাকে। একত্রে উড়ে যায় এবং একত্রে নামে।  

শরীরের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পুরুষ হাঁসটির খুব সুন্দর রূপালি ডানা রয়েছে। এটি দেখে চমৎকার বোঝা যায় যে- এটি ‘গিরিয়া হাঁস’। খুব কম হাঁসেরও ছাই রঙের রূপালি ডানা রয়েছে। মেয়ে গিরিয়া হাঁসের শরীর বাদামি-খয়েরি রঙের। ছেলে হাঁসটির শুধু যে চোখের উপর সাদা তা নয়। ওর পেট এবং পাশের অংশটা সাদাটে। এজন্য তাকে দূর থেকে চেনা যায়। প্রজনন মৌসুমে এর ছেলে হাঁসটির পালকগুলো লম্বা লম্বা হয়ে ঝুলে পড়ে দু’পাশে।

শীত মৌসুমে শেষ হলে তাদের প্রজনন মৌসুমে এ হাঁসগুলো ইউরোপ-রাশিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলে ফিরে যায় এবং ওখানেই ওরা ১০-১২টা করে ডিম দেয়। তারপর ছানা ফুটিয়ে আবার শীত মৌসুমে ছানাদের সঙ্গে নিয়ে ওরা আমাদের দেশে ফিরে আসে বলে জানান বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং পাখি গবেষক ও লেখক ইনাম আল হক।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯ 
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।