ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খানের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২১
বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খানের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজার: বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী তানিয়া খানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার (১৩ মার্চ)। তার একান্ত প্রচেষ্টায় গড়ে উঠা বন্যপ্রাণীর সেবা কেন্দ্র ‘সোল’ এর মাঝেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

গত ১৩ মার্চ ২০১৯ বুধবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বন্যপ্রাণী গবেষক, আলোকচিত্রী এবং সংরক্ষণকর্মী তানিয়া খান।

শুধু বন্যপ্রাণী নয়, সব ধরনের প্রাণীর প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল অপরিসীম। আহত প্রাণীদের মাতৃ মমতায় পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্থ করে তুলতেন। সুস্থ হওয়া প্রাণীদের আপন আবাসে ফিরিয়ে দিতেন। এর জন্য তিনি মৌলভীবাজারের পূর্ব-দক্ষিণ কালেঙ্গায় SOUL (Save Our Unprotected Life) নামক সংস্থা গড়ে তুলেন। সকল মানুষকে খুব সহজেই আপন করে নেবার অসাধারণ মানবিক গুণের অধিকারী ছিলেন তিনি।

পারিবারিক সূত্র জানা যায়, দেশের বাড়ি নারায়নগঞ্জে হলেও বেড়ে উঠা ঢাকা শহরে। শৈশবে মা হারানো তানিয়াকে তাঁর বাবাই মা-বাবার যত্নে পালন করেন। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল থেকে পাঠশালা পাঠ চুকিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকত্তোর সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনেই চারপাশের পোষা প্রাণীদের প্রতি তার অপরিসীম মমত্ববোধ ফুটে ওঠে।

পরবর্তীতে বাংলাদেশ বন বিভাগের কর্মকর্তা মুনির আহমেদ খানের সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারপর থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সংরক্ষিত বনগুলো দিনের পর দিন ঘুরে ঘুরে গবেষণার কাজ শুরু করেন।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের জন্য প্রথম ও দুর্লভ কিছু পাখি রেকর্ড করেন তানিয়া খান। পাখি ছাড়াও ‘হিমালয়ান মোল’ নামক স্তন্যপায়ী প্রাণি বাংলাদেশের জন্য প্রথম রেকর্ড করেন তিনি। ‘ফলস কোবরা’ নামক সাপ, দুই প্রজাতির ব্যাঙ ও চিকিলা নামক উভচরও প্রথমবারের মত রেকর্ড করেন তিনি। বামন মাছরাঙার উপর গবেষণা করে তিনি পাখি-বিজ্ঞানের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। বন্যপ্রাণী ছাড়াও তিনি প্রজাপতির ছবি তুলতেন ও নতুন প্রজাপতি রেকর্ড করেছেন। তাঁর গবেষণাপত্রের সংখ্যা প্রায় ১৫টি। তিনি বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য হিসেবে জলচর পাখি শুমারি ও পাখির রিঙ্গিং কর্মসূচিতে বহুবার অংশগ্রহণ করেছেন।

গবেষণার পাশাপাশি তিনি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কাজও করে গেছেন। সেই প্রেক্ষাপটের জীবদ্দশায় তিনি তিনটি পুরস্কার লাভ করেন। মরণোত্তর বঙ্গবন্ধু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পদক লাভ করেন এই ক্ষণজন্মা তানিয়া।

২০১৮ সালের ১ জুলাই বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের অস্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশেষ সংখ্যায় ‘জীবিত-মৃত প্রাণীদের মা’ শিরোনামে তানিয়া খানের উপর তথ্যভিত্তিক একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তানিয়া খানের তোলা বহু বন্যপ্রাণী বিষয়ক গবেষণা বাংলানিউজসহ দেশের বহু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২১
বিবিবি/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।