ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

স্যাটেলাইট লাগানো ১২টি বাটাগুর বাসকা সুন্দরবনে অবমুক্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২২
স্যাটেলাইট লাগানো ১২টি বাটাগুর বাসকা সুন্দরবনে অবমুক্ত

বাগেরহাট: সুন্দরবনে মহাবিপন্ন ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে। কচ্ছপগুলোর পিঠে স্যাটেলাইট লাগানো রয়েছে।

বুধবার (২৫ মে) বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ছেদনখালী খালের চরে স্যাটেলাইট লাগানো এসব কচ্ছপ ছাড়া হয়।  

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

কচ্ছপ অবমুক্ত করার সময় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু’ এর কিউরেটর টনিসহ বন বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ১০টি ও ভারত থেকে চলে আসা খুলনা-পটুয়াখালী থেকে উদ্ধার করা দু’টি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপসহ মোট ১২টি কচ্ছপ সুন্দরবনের ছেদনখালী খালের চরে অবমুক্ত করা হয়েছে। কচ্ছপগুলোর পিঠে স্যাটেলাইট লাগানো রয়েছে। তাদের গতিবিধি আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পারব। এর মাধ্যমে এসব কচ্ছপের আচার-আচারণ ও জীবন সম্পর্কে আরও স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, একটা সময় ছিল, যখন সুন্দরবনের এ ধরনের মৃদু লবণযুক্ত পানির কচ্ছপ ছিল বাটাগুর বাসকা। বর্তমানে এ ধরনের কচ্ছপ আর দেখা যায় না। সুন্দরবনের কোথাও এ ধরনের কচ্ছপ আছে কি না, তা খুঁজতে ও কচ্ছপের গতিবিধি জানার জন্য এ ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে।  
২০০০ সালের দিকে বন্যপ্রাণী গবেষকরা মনে করতেন, পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোনো অস্তিত্ত্ব নেই। পরে ২০০৮ সালে গবেষকরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কিনা, তা খুঁজতে শুরু করেন। খুঁজতে খুঁজতে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে আটটি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। যার মধ্যে চারটি পুরুষ ও চারটি স্ত্রী। প্রজননের জন্য গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয় কচ্ছপগুলোকে। বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকেরা নিবিড়ভাবে লালন পালন ও প্রজননের চেষ্টা করেন বাটাগুর বাসকাগুলোকে। তারপরও তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। তবে কয়েক বছরে গাজীপুরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল মা কচ্ছপগুলো। সেখানে ভালো সাড়া পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল আটটি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেওয়া ৯৪টি ছানাসহ করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।

পরে ২০১৭ সালে দু’টি কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা হয়। ২০১৮ সালে দু’টি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এসব বাচ্চা থেকে ২০১৭ সালে দু’টি, ২০১৮ সালে পাঁচটি, ২০১৯ সালে পাঁচটি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০টি কচ্ছপ সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।