ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

স্বামীর মৃত্যুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স দায়ী!

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫
স্বামীর মৃত্যুর জন্য অ্যাম্বুলেন্স দায়ী! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আমার স্বামী ছিলেন একজন আদর্শ জীবনসঙ্গী ও সবচেয়ে ভালো বন্ধু। গতবছর আমার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার ভালো-খারাপ সব দিনগুলোয় সে আমার পাশে ছিল।



দুঃখভরে এভাবেই কথাগুলো বলে ওঠেন যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলবাসী লিসা। চলতি বছরের গত ৫ জানুয়ারি তিনি তার স্বামীকে হারান।  

২০১৩ সালে লিসা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এমথুথুজেলি এমপংওয়ানাকে। নতুন বছরের শুরুতেই হঠাৎ করে এমপংওয়ানা নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বামীর এ অবস্থা দেখে লিসা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর জন্য সেদেশের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ইমার্জেন্সি হেল্পলাইনে (১১১) ফোন করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি আসতে দেরি করে।


প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর একটি অ্যাম্বুলেন্স তাদের বাড়িতে পৌঁছায়। গাড়িটি এমপংওয়ানাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সময় লাগায় আরও তিন ঘণ্টা। এর মধ্যেই তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন।

শোনা যাক লিসার মুখে, ওর খারাপ অবস্থা দেখে আমি ১১১ তে ফোন করেছিলাম। সে তখন ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারছিল না। তারা জানিয়েছিলেন, দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্স তারা পাঠাচ্ছেন। কিন্তু ঘটেছিল তার উল্টো।



ব্রিস্টল রয়েল ইনফার্মারিতে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় ৩৮ বছর বয়সী এমপংওয়ানার। দীর্ঘদিন ধরেই মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি।

প্রথমে অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষ রোগীর লক্ষণ শুনে ভেবেছিলেন, এটা নিছক ফ্লু। কিন্তু তাকে অনেক আগেই হাসপাতালে ভর্তি করা উচিৎ ছিল। আমি বুঝলাম না, প্যারামেডিক কেন তাকে যথাসময়ে হাসপাতালে নিলেন না! যোগ করেন লিসা।



এ ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষ তার কাছে ক্ষমা চায়। কিন্তু লিসার বক্তব্য, যদি তারা দেরি না করতেন, তার স্বামী হয়তো আজও বেঁচে থাকতেন!

লিসা বলেন, তারা ক্ষমা চাইলেই আমার স্বামী আমার কাছে ফিরে আসবে না। আমি সমবেদনা চাই না। আমি শুধু চাই, এ রোগটির সম্পর্কে মানুষ সচেতন হোক।



এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্রের ভাষ্য, রাত ১১টায় জ্বর ও মাথাব্যাথার এক রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আমরা এ ফোনটি পাই। রোগীকে ব্রিস্টল রয়েল ইনফার্মারিতে নেওয়ার আগে আমাদের কর্মীরাই তার সেবা করেছিলেন। তবে ব্যস্ততার কারণে দেরিতে পৌঁছানোর জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।

বর্তমানে লিসা তার স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড়ে ব্যস্ত। তবে পুরো অর্থ জোগাড় করা তার জন্য কষ্টদায়ক, এজন্য তিনি অনলাইন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা সঞ্চয়ের চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।